• পরিবারিক সেলুন থেকেই ক্ষুর আনে পাম্মি, নলি কাটল কে?
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দেব খুনের ঘটনায় প্রেমিকা‌ই মাস্টারমাইন্ড। দীর্ঘ জেরার পর নিশ্চিত কুলটি থানার পুলিস। পুলিসের দাবি, প্রেমিকা পাম্মির বাপেরবাড়ির লোকজন চুল, দাড়ি কাটার কাজে যুক্ত। তাদের ব্যবহার করা ক্ষুর দিয়েই দেব সিংয়ের নলি কাটা হয়। তিনদিন ধরে প্রেমিকাকে টানা জেরার পর পুলিসের হাতে এই তথ্য এসেছে। পুলিস এও জানতে পেরেছে, দেব সিং খুনের মাস্টারমাইন্ড প্রেমিকা পাম্মি শর্মাই। কিন্তু, কেন প্রেমিককে খুন করাল সে? পুলিসের দাবি, রেজিস্ট্রি ম্যারেজের আয়োজন হওয়ার পর প্রেমের সম্পর্ক থেকে বের হতে চেয়েছিল পাম্মি। কিন্তু, দেব সম্পর্ক রাখতে মরিয়া ছিল। সেই কারণেই তাকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র করে প্রেমিকা।

    মাস্টারমাইন্ড হলেও পুলিস জানতে পেরেছে, দেব সিং খুনের সময় পাম্মি ঘটনাস্থলে ছিল না। সেদিন অন্যান্য দিনের মতোই অফিস থেকে প্রেমিকা পাম্মিকে নিয়ে নিয়ামতপুরে আসেন দেব। পাম্মি সেখানে বাইক থেকে নেমে যায়। তারপর দেব বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। পুলিসের দাবি, খুব সম্ভবত সেখানে পাম্মি ও দেবের অতি পরিচিত কেউ বাইকের পিছনে বসে। ফাঁকা রাস্তা দেখেই পিছন থেকে দেবের নলিতে ক্ষুর চালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিসের একাংশের দাবি, পরিবারের লোককে দিয়েই নিজের পথের কাঁটা প্রেমিককে খুন করিয়েছে পাম্মি। যদিও কে খুন করেছে, তা এখনও জানাতে চাইছে না পাম্মি।

    ডিসি(পশ্চিম) সন্দীপ কাররা বলেন, খুনের ঘটনায় প্রেমিকাকে গ্রেপ্তার করে কয়েক দফায় জেরা করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কারা যুক্ত রয়েছে, তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

    প্রসঙ্গত, ৪ জুন, বুধবার কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত সীতারামপুর-এথোড়া রাস্তার উপর হাড়হিম হত্যাকাণ্ড সামনে আসে। পুলিস সেদিন গভীর রাতে রাস্তার পাশ থেকে দেব সিংয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তদন্ত যত এগিয়েছে ততই রহস্য ঘণীভূত হয়েছে। ঘটনার পরেরদিনই দেবের প্রেমিকার ভোলবদল হয়। পরিবার থেকে সহকর্মী সবাই জানতেন, একই অফিসে কর্মরত দেব ও পাম্মি পরস্পরকে ভালোবাসে। সহকর্মীদের সাহায্যে দু’জনের আইনি বিয়ের প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল। অথচ, দেব খুন হতেই প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করে পাম্মি। পুলিস জানতে পেরেছে, খুন হওয়ার পর দেবের বাড়ি ‘দুর্ঘটনা হয়েছে’ বলে খবর পৌঁছে দিয়েছিল পাম্মিই। পুলিস মনে করছে, পুরো ঘটনাটি দুর্ঘটনার বলে চালানোর জন্যই এই পরিকল্পনা করেছিল সে। ক্ষতচিহ্ন দেখে পুলিস নিশ্চিত হয়, দেবকে সূক্ষ্ম ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। কারণ, তার ক্ষত গভীর হয়নি। তারপরই পাম্মিকে জেরা করে পুলিস নিশ্চিত হয়, ক্ষুর দিয়েই গলা কাটা হয়েছিল। কে দেবের গলায় ক্ষুর চালাল, তা বের করাই এখন চ্যালেঞ্জ পুলিসের কাছে।
  • Link to this news (বর্তমান)