• মূক-বধির মেয়েকে খুন, গঙ্গারামপুর থানায় আত্মসমর্পণ মায়ের, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: আটবছরের শিশুকন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ মায়ের। ধৃতের নাম রিপা খাতুন। গঙ্গারামপুরের পাটুলের বছর সাতাশের এই মহিলা কোলে আরেক শিশুকে নিয়ে থানায় এসে অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন। বলেন, আমার ৮ বছরের মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছি। সেকথা শুনেই হতভম্ব ডিউটি অফিসার। একজন মা যে নিজের মেয়েকে খুন করতে পারেন, বিশ্বাসই হচ্ছিল না থানার পুলিসকর্মী ও আধিকারিকদের। কেন সন্তানকে খুন করলেন? সজল চোখে মহিলার উত্তর, জন্মের পর থেকেই মেয়ে কথা বলতে পারে না। আমার কথা বুঝতে পারে না। রাগে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছি।

    এরপরই মহিলার সংযোজন, সংসার থেকে মুক্তি চাই। কিন্তু স্বামী আমাকে যেতে দিচ্ছে না। পুরো ঘটনা শোনার পর অভিযুক্ত মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে মেয়েটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। পরিবারের বাকি সদস্যের অলক্ষ্যে সুযোগ বুঝে মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন রিপা। পুলিস শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

    এদিকে বধূর কাণ্ডে অবাক গ্রামবাসী। তাঁরা অভিযুক্ত মহিলার ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন।  মেয়েকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ পেশায় রাজমিস্ত্রি আব্দুল আজিজ। এদিন সকালে কাজে গিয়েছিলেন। থানা থেকে ফোন পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। বউ যে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে, বিশ্বাসই হচ্ছে না তাঁর। আজিজ বলেন, বউয়ের কাছে এখনও আমার পুত্রসন্তান আছে। তাকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে চাই। ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন করছি। 

    স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আজিজ। গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিস আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, ছ’সাত মাস আগে রিপা তাঁর কোলের শিশু সহ আটবছরের মেয়েকে ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়ি চলে যান। আজিজ স্ত্রীকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। বড় সন্তান মূক ও বধির হওয়ায় রিপা খুব হতাশ ছিলেন। সেজন্যই কি খুন? তদন্ত করছে পুলিস।  রিপা খাতুন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)