অর্থ কমিশনের টাকা খরচে পিছিয়ে মালদহ, টেন্ডারের গেরোয় আটকে থাকছে পঞ্চায়েতের কাজ
বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
সন্দীপন দত্ত, মালদহ: একাধিক সমস্যা। তবে, গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংহভাগ কাজ আটকে যাচ্ছে টেন্ডারের গেরোয়। গ্রামীণ উন্নয়নে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে পিছিয়ে মালদহের ৩০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত। টাকা খরচের সময় বেঁধে দিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের নিরিখে পিছিয়ে পড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তাঁদের স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে টাকা খরচ করতে না পারলে আধিকারিক সহ পুরো টিমের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় সাত থেকে ১০ টি ব্লকের ৩০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামীণ উন্নয়নের কাজে অনীহা লক্ষ্য করা গিয়েছে। মালদহের ৩০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে এখনও ৬৩ কোটি টাকা পড়ে আছে। তাদের খরচের পরিমাণ মাত্র ৩৯ শতাংশ। মালদহ জেলা পরিষদের অতিরিক্ত নির্বাহী আধিকারিক সেখ আনসার আহমেদ বলেন, এই টাকা আগামী ছ’মাসের মধ্যে খরচ করতেই হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন গ্রাম পঞ্চায়েতে এতো টাকা পড়ে থাকছে? প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, মালদহের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নেই। কারণ কোথাও নির্বাচিত প্রধান জেল খাটছেন। আবার পঞ্চায়েতে টেন্ডার নিয়েও একাধিক গোষ্ঠীর তুমুল ঝামেলা চলছে। পঞ্চায়েত সদস্যদের মতবিরোধের কারণে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বৈঠকও ডাকা যাচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রে। তাই গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে ইতিমধ্যে দু’দফায় বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। প্রথম বৈঠকে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা ১৫ টি এবং দ্বিতীয়বার আরও ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল।
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ১৩ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের নিরিখে সবথেকে পিছিয়ে পড়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি হল রতুয়া-২ ব্লকের পিরগঞ্জ। এই পঞ্চায়েত এক টাকাও খরচ করতে পারেনি। এছাড়াও পিছনের সারিতে থাকা বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হল রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙা, রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি, মানিকচক ব্লকের নূরপুর, গোপালপুর, মথুরাপুর ও ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণপুর, বেদরাবাদ ও বখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত, কালিয়াচক-২ ব্লকের বাঙ্গিটোলা গ্রাম পঞ্চায়েত, কালিয়াচক-১ ব্লকের ইসলামপুর-২, আলিনগর, আলিপুর-১ ও কালিয়াচক -১ গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এছাড়া হরিশ্চন্দ্রপুর -১ ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর, কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েত, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সুলতাননগর ও মশালদহ গ্রাম পঞ্চায়েত। চাঁচল-২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া, ধানগাড়া-বিশানপুর, গৌড়হন্ড। বামনগোলা ব্লকের পাকুয়াহাট তালিকায় রয়েছে। হবিবপুর ব্লকের হবিবপুর, ঋষিপুর ও আইহো গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ইংলিশবাজার ব্লকের কোতওয়ালি, নরহট্টা, কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতও পিছিয়ে পড়া পঞ্চায়েতের তালিকায় নাম তুলেছে।