• এটিএম লুটের ঘটনায় বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে তল্লাশি, তৃষ্ণা মেটাতে লোকালয়ে, পুলিসের জালে তিন দুষ্কৃতী
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: দিনের পর রাতেও বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল দুই দুষ্কৃতী। তেষ্টায় প্রাণ যাচ্ছিল তাদের। রবিবার ভোরে জল খেতে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে আসতেই ময়নাগুড়ির এটিএম লুটকাণ্ডে পুলিসের জালে ধরা পড়ে কুখ্যাত দুই দুষ্কৃতী। এদিকে, বিকেলে গজলডোবা থেকে ধরা হয় আরও একজনকে। যদিও এখনও বাকি দুষ্কৃতীরা অধরা। 

    গজলডোবা ফাঁড়ির পুলিস জানিয়েছে ধৃতরা হল-মহম্মদ শামসের খান, আসলুপ খান ও ইরফান খান। এদের বাড়ি যথাক্রমে বিহার, হরিয়ানা ও রাজস্থানে। পুলিস ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। ধৃত প্রথম দু’জনকে পুলিস এদিনই জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলে। আদালত ১০ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌম্য চক্রবর্তী। 

    শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা রাতভর তল্লাশি চালিয়েছি। স্থানীয়দের সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। এটিএম লুটকাণ্ডে জড়িতদের তিনজন অবশেষে ধরা পড়েছে। 

    শুক্রবার গভীর রাতে ময়নাগুড়ির বোলবাড়ির দু’টি এটিএম লুট হয়। সেই ঘটনায় রবিবার ভোরে ধরা পড়ে শামসের ও আসলুপ। অন্যদিকে, বিকেলে গ্রেপ্তার হয় ইরফান। তবে এখনও অধরা আরও দুই দুষ্কৃতী। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে টানা ২৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। সরস্বতীপুর চা বাগান থেকে এদিন ভোরে শামসের ও আসলুপ লোকালয়ে আসে। আর তখনই স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিস ওই দু’জনকে পাকড়াও করে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, অভিযুক্তরা আগেও অন্যত্র এটিএম লুটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। 

    পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্তরা বিভিন্ন জেলায় অপরাধমূলক কাজকর্ম করেছে।  ২০১৬ সালে কেরলে, ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশে এবং সম্প্রতি রায়গঞ্জে অভিযুক্তরা অপরাধমূলক কাজ করে। এরা অসম নম্বরের গাড়ি নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটার দিক দিয়ে ময়নাগুড়িতে এসেছিল। ঘটনার দিন নিজেদের দিল্লি পুলিসের কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্কের এক কর্মীকে আটক করে। তাঁকে ভয় দেখিয়ে এটিএম মেশিন খোলার কার্ডও হাসিল করে। পরে সেই রাতেই লুটের ঘটনা ঘটায়। যে কর্মীর থেকে ওই কার্ড নিয়েছিল অভিযুক্তরা, তাকেও জেরা করছে পুলিস। 

    জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার খণ্ডবাহলে উমেশ গণপত বলেন, তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের সন্ধানে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে তল্লাশি চলছে আমাদের। 

    এটিএম লুটের ঘটনায় অভিযুক্তরা যে গাড়ি নিয়ে এসেছিল সেটির ভিতর অসম, উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলার নম্বর প্লেট মিলেছে। অভিযুক্তরা গ্যাস কাটার দিয়ে দু’টি এটিএম কেটেছিল। পুলিস জানিয়েছে, মোট পাঁচ দুষ্কৃতী ছিল। এরা বিভিন্ন সময়ে একাধিক রাজ্যে অপরাধমূলক কাজ করেছে। এদের দলে আরও লোকজন রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)