• নিষেধাজ্ঞা উঠতেই দীঘা থেকে ২০০০ ট্রলার পাড়ি দিল গভীর সমুদ্রে! চোখে গভীর আশা, মনে আশঙ্কা...
    ২৪ ঘন্টা | ১৬ জুন ২০২৫
  • কিরণ মান্না: দু'মাস 'ব্যান পিরিয়ড' কাটিয়ে প্রায় ২০০০ ট্রলার আজ, রবিবার থেকে মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রে পাড়ি দিল। এবার কি পর্যাপ্ত ইলিশ উঠবে? মরশুমের শুরুতেই দিঘা উপকূলে এই প্রশ্ন ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। কারণ, গত মরশুমে সেভাবে ইলিশ বা অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়েনি। তবে এবার অন্তত ইলিশের খরা কাটবে-- এই আশা নিয়েই আজ ১৫ জুন থেকে আবারও গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।

    মাছের প্রজননের জন্য

    প্রসঙ্গত, ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ছিল ব্যান পিরিয়ড। মাছের প্রজননের জন্য এই সময়ে সমুদ্রে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আজ, রবিবার থেকেই দিঘা, পেটুয়াঘাট, শঙ্করপুর, সৌলা-সহ একাধিক উপকূলীয় মৎস্য বন্দরে এখন সাজো সাজো রব। প্রশাসনের তরফ থেকেও নেওয়া হয়েছে একাধিক নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ। প্রতিটি ট্রলারে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বিপদ সংকেত যন্ত্র ও লাইফ জ্যাকেট।

    অন্যত্রও

    সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে পাড়ি দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরাও। জানা গিয়েছিল, শনিবারই ডায়মন্ড হারবার কাকদ্বীপ নামখানা ফ্রেযারগঞ্জ এলাকা থেকে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি প্রায় সেরে ফেলেছেন। 

    বেশ কয়েক বছর ধরে মনমতো ইলিশ মাছ পাচ্ছেন না মৎস্যজীবীরা। তবে এ বছর তাঁরা একটু আশাবাদী। কেননা, মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ক্ষেত্রে এবার নতুন প্রযুক্তি এসেছে। আগের-আগের বারের চেয়ে এবার তাঁরা কিছুটা হলেও বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরতে সক্ষম হবেন, এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। 

    জিপিএস ট্র্যাক এবং

    এবার মৎস্য দফতর জিপিএস ট্র্যাকের ব্যবস্থা করেছে। মাছ ধরতে গিয়ে যাতে অজান্তে সীমানা লঙ্ঘন না হয়ে যায়, সেটা দেখাই এই প্রযুক্তির লক্ষ্য। তেমন ঘটলে আগাম সর্তকতা আসবে। পাশাপাশি আবহাওয়ার সর্তকতা, ট্রলারে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তার সতর্কতা এবং গভীর সমুদ্রে মাছের ঝাঁক কোন এলাকায় আছে-- এই সব জরুরি বিষয়ের তথ্য জোগাবে এই ব্যবস্থা। প্রতিটি ট্রলারেই এমন ব্যবস্থা থাকছে বলে জানা গিয়েছে। এতে দুর্ঘটনার আগাম সর্তকতা পাওয়া যাবে মোবাইলের মাধ্যমে। 

    আশাবাদী

    এক-একটি ট্রলারে ১৮ জন ২০ জন করে মৎস্যজীবী থাকেন। প্রতিবারের মতো এবারও সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল-- দুমাস। সেটা কাটছে আগামী কাল, ১৫ জুন। এর পরেই গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়ার ছাড়পত্র পাবেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের প্রস্তুতিও শেষের পথে। শেষ মুহূর্তে বরফ, তেল মৎস্যজীবীদের খাবার, মাছ ধরার উপকরণ ইত্যাদি ট্রলারে তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। আবহাওয়া ভালো থাকলেই মাছের ঝাঁক ধরা দেবে মৎস্যজীবীদের জালে। তাই মা গঙ্গাকে স্মরণ করে তাঁরা পাড়ি দেবেন অচিরেই। এদিকে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে বরফের দাম কিছুটা হলেও বেড়েছে, জালের দামও বেড়েছে। তা ছাড়া মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার উপকরণের জন্যও বেশ কিছুটা খরচ বহন করতে হয়। একটি ট্রলার ছাড়তে মোটামুটি খরচ হয় দুলক্ষ টাকার উপরে। ইলিশ মাছ এবারে ভালো হলে এবং দাম ভালো পাওয়া গেলে, খরচটা উঠে আসবে, এমনই ভাবনা তাঁদের। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)