সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় এক শিখ পুলিশ অফিসারের উদ্দেশে হাওয়াই চটির কাটআউট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল সুকান্তর বিরুদ্ধে। এরপর রবিবার পুরুলিয়া, আসানসোল-সহ বিভিন্ন জেলার গুরুদ্বারের পক্ষ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়। তাঁদের দাবি, সুকান্তকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সুকান্ত।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার। দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মহেশতলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশকে লক্ষ্য করেই ইটবৃষ্টি শুরু হয়। ইটের আঘাতে রক্তাক্ত হন এক পুলিশকর্মী। রবীন্দ্রনগর থানার সামনে রীতিমতো তাণ্ডব চলে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। ভাঙচুর চলে পুলিশের গাড়িতেও। এরপরই এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করে পুলিশ।
পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিজেপি কর্মীদের নিয়ে মহেশতলা যান সুকান্ত। কিন্তু রাস্তাতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে তুলসীগাছ দিতে কালীঘাটের উদ্দেশে রওনা দিতে যান সুকান্ত। তখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযোগ, প্রিজন ভ্যানে তোলার সময়ে এক শিখ পুলিশ কর্মীর দিকে হাওয়াই চটির ছবির একটি কাটআউট ছুড়ে মারেন সুকান্ত।
এই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। সুকান্তকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা। সঙ্গে গুরুদ্বারের পক্ষ থেকে আসানসোল, পুরুলিয়া-সহ একাধিক জেলায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক শিখ পুলিশ অফিসারকে খালিস্তানি বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই নিয়েও উত্তাল হয়ে উটেছিল গোটা বাংলা। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন এ দিন বলেন, ‘শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আমরা টানা ৩৬ দিন অনশন করেছিলাম। সুকান্ত ক্ষমা না চাইলে আরও বড় আন্দোলন হবে।’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের অফিশিয়াল পেজে লেখা হয়েছে, সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে সমগ্র শিখ সম্প্রদায়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই শিখ সংগঠন সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি ক্ষমা না চাইলে, আরও বৃহত্তর আন্দোলনে গড়ে তোলা হবে।
সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। এক পুলিশ অফিসার আমাকে ঠেলে দেন। তাই জুতোটা ওখানে গিয়ে পড়ে। কিন্তু ওই শিখ পুলিশ কর্তাই তো কোনও অভিযোগ করেননি।’