নিজের মেয়েকে হত্যার দাবি করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ মায়ের। হাড়হিম করা ঘটনা দক্ষিণ দিনাজপুরে। আফরিন পারভিন (৯) নামে শিশুটির দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘরেই মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি পুলিশের। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মেয়েটি জন্ম থেকেই মূক ও বধির। আফরিনের বাবা আব্দুল আজিজ পেশায় রাজমিস্ত্রী। রোজকার মতোই এ দিন সকালে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঘরে ছিল শুধু মা রিম্পা বিবি ও দুই শিশু সন্তান। অভিযোগ, সেই সুযোগেই নিজের মেয়েকে ঘরের ভিতরে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেন রিম্পা। তার পর স্বামীর ফেরার আগেই নিজেই হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যান স্থানীয় গঙ্গারামপুর থানায়। থানায় গিয়ে ওই মহিলা বলেন, ‘আমি নিজের মেয়েকে মেরেছি।’
পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং অভিযুক্ত মাকে গ্রেপ্তার করে। গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপায়ন ভট্টাচার্য জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রাথমিক তদন্তে বালিশ চাপা দিয়ে খুনের প্রমাণ মিলেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। তদন্ত চলছে।
তবে এখানেই শেষ নয় রহস্য। প্রতিবেশী লফলত মিঞা বলেন, ‘আমরা আগেই বুঝেছিলাম, কিছু একটা গড়বড় চলছে ওই বাড়িতে। মেয়েটা ইশারায় বুঝিয়ে দিয়েছিল, ও কিছু একটা দেখে ফেলেছে। হয়তো সেটা মা রিম্পার অপকর্ম ছিল।’ তবে ঠিক কী কারণে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি পুলিশ।
শিশুটির এক আত্মীয়া ইয়ানুর খাতুন জানান, কিছু দিন আগে আফরিন বারবার আমাকে ইশারায় বোঝাচ্ছিল, ও ভয় পাচ্ছে, ওর ভাল লাগছে না। তখন কিছু বুঝিনি। এখন সব স্পষ্ট। গোটা ঘটনায় আফরিনের বাবা আবদুল আজিজ বাকরুদ্ধ। তাঁর কথায়, ‘এই ঘটনা আমার পরিবারটাকে শেষ করে দিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ। পুলিশের উপর ভরসা রাখছি।’