এই সময়, আলিপুরদুয়ার: অরণ্যের লাগোয়া মানুষের বসতি। অথবা কিছুটা দূরে। খাবারের খোঁজে সেখানে চলে আসছে হাতি। এর ফলে মানুষ ও হাতির সংঘাত তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। দেওয়ালে এঁকে দেওয়া হচ্ছে রঙিন বার্তা।
জেলার ছ’টি ব্লকের বন লাগোয়া লোকালয়ে হাতি-মানুষের সংঘাত ইদানীং বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছরে প্রতি রাতে জেলা জুড়ে লোকালয়ে হাতিদের আনাগোনা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এতে হাতি-মানুষের সংঘাতের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে।
হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে বন লাগোয়া এলাকার মানুষদের সচেতন করছে জেলা প্রশাসন। বুনো হাতিদের থেকে সাবধান থাকার জন্য এ সব এলাকার দেওয়ালে রঙিন অলঙ্করণ করছে তারা। কী করা উচিত ও কোনটা উচিত নয়, সে সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে রঙিন ছবিতে।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় এখন দেখা যায়, হাতি লোকালয়ে চলে এলেই তাকে ঘিরে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। অনেকে হাতিকে বিরক্ত করে। তারপরে সেই আলিপুরদুয়ারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ ঘটনার ‘রিল’ তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার জন্য।
এ নিয়ে সচেতন করা হয়েছে দেওয়াল-ছবিতে। এ বিষয়ে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করার প্রয়াস জারি থাকলেও এ বার সংঘাতে লাগাম টানতে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে জেলা প্রশাসন।
ঘটনার কার্য-কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে জেলা প্রশাসন বিশেষ একটি কারণের খোঁজ পেয়েছে, যা হাতি ও মানুষের সংঘাত বাড়িয়ে তুলছে। প্রশাসনিক কর্তাদের পর্যবেক্ষণ, ভোরবেলায় অথবা রাতে খোলা আকাশের নীচে শৌচকর্ম করতে গিয়ে বুনো হাতির সামনে পড়ে যাওয়ায় আক্রান্ত হতে হচ্ছে অনেককে।
বিষয়টি নজরে আসার পরেই জেলার বন সংলগ্ন লোকালয়গুলিতে ‘নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের আওতায় এক বিশেষ সমীক্ষা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। যাঁদের শৌচালয় নেই, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি হচ্ছে।
সম্প্রতি এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক আর বিমলা। তিনি বলেন, ‘মানুষ-বন্যপ্রাণের সংঘাতে লাগাম টানতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। জেলার ছ’টি ব্লকের অরণ্য সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের জন্য শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলে জেলা প্রশাসন উপভোক্তাদের পাকা শৌচালয় গড়ে দেবে।’