• ২১ জুলাইয়ের পাল্টা কী ভাবে, দোটনায় গেরুয়া-দল
    এই সময় | ১৫ জুন ২০২৫
  • এই সময়: ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস! ওই দিন খবরের শিরোনামে থাকতে চায় পদ্মফুলও।

    বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ বলছেন, ২১ জুলাই পাল্টা কর্মসূচি করতেই হবে, যাতে টিভি স্ক্রিনের অর্ধেক বিজেপির দখলে থাকে। তবে এই ভাবনা প্রথম নয়। গত দু’-তিন বছর ধরে ২১ জুলাইয়ের দিন পাল্টা কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে তারা। কিন্তু সেটা খুব একটা কাজে আসেনি।

    এ বার তাই মাসখানেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে নামতে চাইছে বঙ্গ-বিজেপির একাংশ। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলের সঙ্গে এ বিষয়ে দলের কয়েজন বিধায়ক শনিবার আলোচনা করেছেন বলে সূত্রের খবর।

    এক বিধায়কের কথায়, ‘দলের শীর্ষ নেতারা খুব শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। পরের বছর বিধানসভা ভোট। এ বছর ২১ জুলাই যদি আমরা শক্তি প্রদর্শন করতে পারি, তা হলে তৃণমূলের মনোবল ভাঙবে। বিজেপির নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরাও চাঙ্গা হবেন।’

    পাল্টা কর্মসূচি সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশ নিয়ে এ দিন বিঁধেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কটাক্ষ, ‘২১ জুলাই কোনও চোর বাড়িতে থাকবে না। চোরেরা সবাই কলকাতায় আসবে। তাই কলকাতার বাসিন্দারা একটু সাবধানে থাকবেন।’

    গত বছর ২১ জুলাইয়ের আগে শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন, তৃণমূল যে দিন ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করবে, সে দিন রাজ্য জুড়ে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও দিবস’ পালন করবেন তাঁরা। কিন্তু তাতে সম্মতি জানাননি রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

    সায় ছিল না দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ২১ জুলাই নয়, ২৬ জুলাই তাঁরা ওই কর্মসূচি পালন করবেন। বিজেপির অন্দরের খবর, ২১ জুলাই তৃণমূলের সমাবেশের সঙ্গে টক্কর নিয়ে পা‍ল্টা কর্মসূচি করলে সংবাদমাধ্যমে দু’টি কর্মসূচির ভিড়ের তুলনা টানা হতো। গত বছর সেই ঝুঁকি নিতে চাননি সুকান্তরা।

    ২০২২-এও ২১ জুলাই বিজেপি ‘উলুবেড়িয়া চলো’–র ডাক দিয়েছিল। কর্মসূচির অনুমতি পেতে আদালত পর্যন্ত ছুটেছিলেন শুভেন্দুরা। কিন্তু সেই কর্মসূচির ‘আস্ফালন’ আর যাই হোক, ধর্মতলায় তৃণমূলের সমাবেশের সঙ্গে টক্কর নেওয়ার পর্যায়ে পৌঁছয়নি।

    এ বছর তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশের বাড়তি তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, পরের বছরই বিধানসভা ভোট। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বারের ২১ জুলাই মঞ্চ থেকেই তৃণমূল নেতৃত্ব বিধানসভা ভোটের ঢাকে কাঠি দিয়ে দেবেন।

    সেটা বুঝে বিজেপির একাংশ চাইছে, ওই দিনই নিজেদের অস্তিত্ব আলাদা ভাবে মিডিয়ার সামনে তুলে ধরতে। বিজেপির এক শীর্ষ সাংগঠনিক নেতার কথায়, ‘দলের কিছু নেতা চাইছেন যে, ২১ জুলাই বিজেপি পা‍ল্টা কর্মসূচি করুক। কিন্তু তাতে বিস্তর ঝুঁকিও আছে। তৃণমূলের সভার মতো ভিড় না হলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটা নিয়ে চর্চা হবে। তার আগে বা পরে বড় কোনও কর্মসূচি করা যেতেই পারে।’

  • Link to this news (এই সময়)