• কুলতলিতে গভীর রাতে খাঁচাবন্দি বাঘ
    প্রতিদিন | ১৫ জুন ২০২৫
  • দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: গ্রামের কাছে চলে আসা বাঘকে ধরার জন্য খাঁচা পাতা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল ছাগলের টোপ। আর তাতেই কেল্লাফতে। গভীর রাতে খাঁচাবন্দি হল বাঘ। লোকালয়ের পাশেই বাঘ ধরা পড়ায় স্বস্তি সাধারণ মানুষের। আপাতত বাঘটি বনদপ্তরের নজরদারিতে রয়েছে। সেটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা চলছে।

    গতকাল শনিবার সুন্দরবনের কুলতলির দেউলবাড়ি গ্রামের রাস্তায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া যায় বলে খবর। সকালে কাজে বেরিয়েছিলেন স্থানীয়রা। তখনই সেই পায়ের ছাপ দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। আশঙ্কা করা হয়, ওই গ্রামের পাশের জঙ্গলে বাঘ ঘাপটি মেরে আছে। দ্রুত খবর পাঠানো হয় বনদপ্তরে। বনদপ্তরের আধিকারিক, কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ওই জঙ্গলের মধ্যেই বাঘ রয়েছে বলে অনুমান। স্থানীয়দের অনেকেই দাবি করেছেন, একটি নয় দু’টি বাঘ জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে। নদী পেরিয়ে বাঘ হানা দিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান।

    নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রামের ওই জঙ্গল লাগোয়া গোটা এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। বাঘকে সেখান থেকে সরিয়ে তার নিজের জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা চলে। স্থানীয়দের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়। মানুষজন যাতে ইতস্তত ঘোরাফেরা না করে, সেই কথাও বলা হয় বনদপ্তরের থেকে। যদি বাঘকে সেখান থেকে বনে ফেরানো না যায়, তাহলে খাঁচা পাতা হবে। সেই কথাও বনদপ্তরের থেকে জানানো হয়েছিল। বনকর্মীরা পরে জানান, দু’টি নয়, একটি বাঘটি গ্রাম লাগোয়া ওই জঙ্গলে রয়েছে। বাঘটিকে জঙ্গলে ফেরানোর জন্য বিস্তর চেষ্টা চলে দিনভর। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

    এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বাঘ ধরার জন্য ওই এলাকায় খাঁচা পাতা হবে। সেই হিসেবে ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা হয়। সজাগ থাকেন বনকর্মী ও গ্রামের মানুষজন। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ বাঘের প্রবল তর্জন গর্জন শোনা যায়। এরপরই গিয়ে দেখা যায়, খাঁচাবন্দি হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সেটিকে নিয়ে গিয়েছেন বনকর্মীরা। আপাতত সেটি বনদপ্তরের নজরদারিতে থাকবে। শারীরিক পরীক্ষা হবে বাঘটির। সুস্থ থাকলে সেটিকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে। বাঘ ধরা পড়ায় স্বস্তি ফিরেছে ওই এলাকায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)