এই সময়, লাটাগুড়ি: জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দুটি এটিএম ভেঙে টাকাভর্তি মেশিন নিয়ে চম্পট দিলো দুষ্কৃতীরা। এরপর পুলিশের তাড়া খেয়ে ঢুকে পড়ল গজলডোবা সংলগ্ন বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে। শনিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও সেই মেশিন কিংবা দুষ্কৃতীদের খোঁজ মেলেনি।
শুক্রবার রাত একটা নাগাদ ময়নাগুড়ি-লাটাগুড়িগামী জাতীয় সড়কের ধারে বোলবাড়ি বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্যাস কাটার দিয়ে দুটো এটিএম প্রথমে কেটে ফেলে দুষ্কৃতীরা। এরপর ভিতর থেকে টাকা রাখার ট্রে বের করে নেয় তারা।
ওই কাউন্টারগুলিতে নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় তল্লাশি। রাতে গজলডোবার কাছে একটি পরিত্যক্ত গাড়ি দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। অসম নম্বরের ওই গাড়ির ভিতর থেকে গ্যাস কাটার, টুপি, মুখোশ-সহ দুটো ভুয়ো নম্বর প্লেটও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পুলিশ জানতে পারে দুষ্কৃতীরা গাড়িটিকে রাস্তার ধারে রেখে লাগোয়া বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গলে আত্মগোপন করেছে। খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ-সহ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের বিরাট বাহিনীও এলাকায় আসে। রাতেই জঙ্গলের ভিতরে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান।
জানা গিয়েছে, ওই বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে এই মুহূর্তে হাতির দলের উপস্থিতি রয়েছে। তবুও সেই ভয় উপেক্ষা করে পুলিশ ও বনকর্মীরা জঙ্গলের ভিতরে আনাচে-কানাচে তল্লাশি শুরু করেন। জঙ্গল লাগোয়া নালা-নর্দমার পাশাপাশি দুর্গম পথেও দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলে।
জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘এটিএমের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। দুষ্কৃতীদের হদিশ পেতে তল্লাশি চলবে।’
তবে জাতীয় সড়কের লাগোয়া হাইস্কুল সংলগ্ন ওই এলাকায় এটিএম কাউন্টার থেকে টাকা লুটের ঘটনায় বোলবাড়ি বাজার জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সমর সরকার বলেন, ‘শনিবার বোলবাড়িতে সাপ্তাহিক হাট ছিল। তারপর এই ঘটনায় আতঙ্ক রয়েছে।’
স্থানীয় বোলবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য পুরঞ্জয় নাগ বলেন, ‘এই এলাকায় দিনের পাশাপাশি রাতেও যদি পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয় সে বিষয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হবে।’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এটিএমগুলিতে কত টাকা ছিল তা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। সম্ভবত রেকি করে এই কাউন্টারগুলি ফাঁকা দেখে তবে দুষ্কৃতীরা লুট করেছে।