• ‘আম পাগল’-এর বাগান পাহারায় আট CCTV
    এই সময় | ১৫ জুন ২০২৫
  • সুজিত রায়, আলিপুরদুয়ার

    টাকাকড়ি, সোনাগয়না কিংবা দলিল-দস্তাবেজের চেয়েও তাঁর কাছে মূল্যবান আম। যে সে আম নয়, জাপানের মিয়াজাকি থেকে শুরু করে আমেরিকার রেড পালমার, সবই আছে তাঁর বাগানে। যদি চুরি হয়ে যায়? এই আশঙ্কায় ‘যকের ধন’-এর মতো আগলে রেখেছেন তাঁর প্রিয় বাগানটি। আম পাহারায় বাগানে লাগিয়েছেন আটটি সিসিটিভি!

    ইতিমধ্যেই বাড়ির সামনে এক বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৬৫ প্রজাতির আম ফলিয়ে নজির গড়েছেন আলিপুরদুয়ারের পূর্ব ভোলারডাবরির বাসিন্দা লোচা দেব। তাঁর বাগানে ফলেছে তিন লক্ষ টাকার (এক কেজি) আম।

    পেশায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কর্মী লোচা বরাবরই আমপ্রেমী। এই ভালোবাসা থেকেই এক সময় আমবাগানটি তৈরি করেছিলেন। তা এখন দেখতে দেখতে এত বড় হয়েছে।

    নিজের বাগানে কাজ করতে করতেই লোচা জানালেন, বিশ্বের সবচেয়ে মিষ্টি আম কারাবাও। সম্প্রতি তিনিও তাঁর বাগানে এই প্রজাতির বীজ রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আম আমার সবচেয়ে পছন্দের ফল। ছোটবেলা থেকে বাবাকে বাগান করতে দেখেছি। সেই থেকে আমারও বাগান করার নেশা।’

    লোচা জানালেন, রেড ড্রাগন, মিয়াজাকি, রেড পালমার, কারাবাও, ভেরিগেটেড ম্যাঙ্গো, রেড আইভরি-সহ আরও অনেক বিদেশি প্রজাতি। রয়েছে দেশি চোষা, হিমসাগরও।

    আমের নেশায় সারাদিন বাগানইে পড়ে থাকেন লোচা। এর জন্যে কম যক্কি পোহাতে হয় না তাঁর স্ত্রী রুপা দাস দেবকে। তাঁর কথায়, ‘আমার স্বামীর এটা খুব ভালো শখ। নিজের সন্তানের মতো আম গাছগুলো আগলে রাখে। বাগান দেখতে রোজ অনেক মানুষ আসেন। তাঁদের অনেক প্রশ্ন আম নিয়ে। অনেক সময় তার জবাব দিতে হয় আমায়।’

    লোচার বাবা নিরঞ্জন দেব অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। এক সময় তিনিই বাগান করতেন। এখন ছেলের আমবাগানে সারাদিন বসে থাকেন। নিরঞ্জনের কথায়, ‘আমার আগে আধ বিঘা জমিতে বাগান ছিল। ছেলে আরও আধ বিঘা কিনে তাতেও বাগান করেছে। বাহারি ফুলও চাষ করে লোচা। এখন আম ফলিয়েছে। নিজের সন্তানের মতো গাছগুলোকে যত্ন করে ও। আটটি সিসি ক্যামেরা গোটা বাগান পাহারা দেয়। আর আমরা তো নজর রাখিই।’

    স্থানীয় বাসিন্দারা লোচাকে ‘আম-পাগল’ বলেও ডাকেন। ডাকবে না-ই বা কেন? ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকায় এমন একটা আমবাগান গড়া তো চাট্টিখানি কথা নয়!

  • Link to this news (এই সময়)