• কেন সোদপুরের তরুণীকে মারধর? পুলিশি জেরায় মুখ খুলল ফুলটুসি
    প্রতিদিন | ১৫ জুন ২০২৫
  • অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: আরিয়ান খানকে বিয়ে করার জন্য সোদপুরের ওই তরুণী বেশকয়েক মাস ধরে ডোমজুড়েরই অন্য একটি ফ্ল্যাটে তাঁর সঙ্গে লিভ ইন করছিলেন। আরিয়ানের মা শ্বেতা খান ওরফে ফুলটুসিই সোদপুরের ওই তরুণীকে তাদের বাঁকড়ার ফকিরপাড়ার ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতে বলে। সেই ফ্ল্যাটে আরিয়ান ও ফুলটুসি থাকত। ফুলটুসির কথা শুনেই তরুণী ফুলটুসির ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন।

    ফুলটুসি পুলিশকে জানিয়েছে, সোদপুরের তরুণীকে নিজের ফ্ল্যাটে বাড়ির কাজের লোকের মতো থাকতে বলে। সে বলে তার তিন বছরের শিশুকন্যাকে দেখাশোনা করতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের বাড়ির কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে ওই তরুণীকে ফুলটুসি আরও জানায়, তাড়াতাড়ি আগের পক্ষের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে চলে এলেই ছেলে আরিয়ানের সঙ্গে ওই তরুণী বিয়ে করতে পারবে। ফুলটুসি তাদের দু’জনের বিয়ে দেবে। তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ওই তরুণীরও একটি শিশুকন্যা রয়েছে। ফুলটুসির কথা শুনে ওই তরুণী তাদের বাঁকড়ার ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে। তবে মাঝে মাঝে ওই তরুণী সোদপুরের বাড়িতে তাঁর আগের পক্ষের শিশুসন্তানকে দেখতে যেত।

    পুলিশের জেরার মুখে ফুলটুসি জানায়, তার তিন বছরের শিশুকন্যাকে ওই তরুণী ঠিকমতো দেখাশোনা করছিল না। এমনকী তার দেওয়া শর্ত মতো ঘরের কোনও কাজ করছিল না ও আগের স্বামীকে তাড়াতাড়ি ডিভোর্স দিচ্ছিল না তরুণী। ফুলটুসকির কথামতো এই কাজগুলো না করার জন্যই ফুলটুসকি তরুণীকে মারধর করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে শিশুকন্যাকে দেখাশোনা করে বাড়ির কাজকর্ম করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও ওই তরুণী ফুলটুসির ফ্ল্যাটে গিয়ে এই কাজগুলি করতে না। এমনকী ওই তরুণী নিজের আগের পক্ষের মেয়েকেও মাঝে মাঝে সোদপুরের বাড়িতে দেখতে যেত। ফুলটুসিকে ওই তরুণী জানায়, সে সোদপুরে নিজের সন্তানকেই ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারে না আর তাই সে ফুলটুসকির সন্তানকেও দেখাশোনা করতে পারবে না। ফুলটুসকি পুলিশকে আরও জানিয়েছে, সে চাইছিল ওই তরুণী তার মেয়েকে দেখাশোনা করা, ঘরের কাজ করার পাশাপাশি বার ডান্সার হোক। তাতে তাদের সংসারে রোজগার বাড়বে। কিন্তু ওই তরুণী সেই কাজেও নিমরাজি থাকায় তরুণীর উপর ক্ষুব্ধ হয় ফুলটুসি। তখন সে তরুণীকে মারধরের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।

    তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বার ডান্সারের ট্রেনিং দেওয়া ও বারে তরুণী ডান্সার সাপ্লাই দেওয়া ছাড়া আর তেমন কোনও কাজ ছিল না ফুলটুসির। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, ফুলটুসি ও তার ছেলে যে রিল বানাতো সেগুলি গান ও নাচের। তার মধ্যে খারাপ কিছু এখনও পর্যন্ত তারা পায়নি। সেক্স র?্যাকেট চালানো কিংবা নীল ছবি বানানোর মতো কোনও তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীরা আপাতত পাননি। তদন্তে পুলিশ মনে করছে, বার ডান্সার সাপ্লাই দেওয়া, শ্বশুরবাড়ির জমি, সম্পত্তি, টাকাপয়সা হাতিয়ে নেওয়া ও পরিচিতদের মারধর করে তাদের উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালানোর কাজটাই মূলত করে অত্যন্ত চতুর ফুলটুসি। অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলটুসি বাঁকড়ায় থাকলেও আদপে বিহারের বাসিন্দা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)