• বৃদ্ধার রহস্যজনক খুনের কিনারা, মগরাহাট থেকে ধৃত ফেরিওয়ালা
    বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুচিপাড়া থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সার্পেন্টাইন লেনে বৃদ্ধার রহস্যজনক খুনের কিনারা। ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লালবাজার এবং মুচিপাড়া থানার যৌথ টিম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মগরাহাট থেকে ময়মুর আলি গাজিকে (৫৩) গ্রেপ্তার করেছে। কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার এই খবর জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরানো ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল, আসবাসপত্রের ক্রেতা হিসেবে শিয়ালদহ, বৈঠকখানা রোড, লেবুতলা পার্ক,  ক্রিক রো, হৃদারাম ব্যানার্জি লেনে নিত্য আনাগোনা ছিল পেশায় ফেরিওয়ালা ময়মুর আলি গাজির। সেই সুবাদে এলাকায় পরিচিত মুখ।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, স্বামী  ও দুই ছেলের মৃত্যুর পর ৭৬ বছরের বৃদ্ধা নমিতা পাল বাড়ির অপ্রয়োজনীয় আসবাসপত্র বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। সেই সূত্রেই নমিতাদেবীর বাড়িতে ফেরিওয়ালা হিসেবে ময়মুর অন্তত বার তিনচারেক এসেছিল। তখনই ময়মুর লক্ষ্য করে, বাড়িতে একাই থাকতেন অসুস্থ নমিতাদেবী। যা দেখেই সে নমিতাদেবীকে খুন করে লুটের পরিকল্পনা করে। গোয়েন্দাদের দাবি, ‘খুনের দিন ভোরে প্রথমে মগরাহাট থেকে ট্রেন ধরে শিয়ালদহ স্টেশনে চলে আসে ময়মুর। স্টেশন থেকে সটান সার্পেন্টাইন লেনে নমিতাদেবীর বাড়িতে আসে। চেনা ফেরিওয়ালা হওয়ায় সদর দরজা খুলে দিতে দ্বিধা করেননি নমিতাদেবী। ঘরে ঢুকেই নমিতাদেবীর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তারপর নমিতাদেবীর আলমারি ও গায়ে থাকা সোনার  চুড়ি, আংটি, বালা, লকেট,  রূপোর সামগ্রী লুটপাট  করে ফের শিয়ালদহ স্টেশন হয়ে সকাল ন’টা নাগাদ মগরাহাটে নিজের বাড়িতে ফিরে যায় সে।’

    কীভাবে রহস্যজনক এই খুনের কিনারা করল পুলিস? তদন্তে নেমে লালবাজারের হাতে ওই তল্লাটের কিছু সিসিটিভি ফুটেজ  আসে। সেই ফুটেজ ঘেঁটেই অস্বাভাবিক গতিবিধির জন্য সন্দেহভাজন হিসেবে গোয়েন্দারা ময়মুরকে চিহ্নিত করেন। এরপর গোয়েন্দারা সার্পেন্টাইন লেন থেকে শিয়ালদহ স্টেশনের ট্রেনে ওঠা থেকে শুরু করে মগরাহাট স্টেশনে নামা পর্যন্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়ে যায়।

    এরপরই লালবাজারের গোয়েন্দারা সোর্সকে কাজে লাগিয়ে মগরাহাটের বাড়ি থেকে ময়মুরকে গ্রেপ্তার করেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নমিতাদেবীর বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া সমস্ত সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়। এদিকে, ধৃত ময়মুরকে শনিবার দুপুরে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। বিচারক অন্নু গুপ্তা তাকে ২৬ জুন পর্যন্ত পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী। 
  • Link to this news (বর্তমান)