তৃণমূল কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর নির্যাতিতার
বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: তমলুক শহরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক প্রলোভনে রাজি না হওয়াই এই হুমকি বলে অভিযোগ। পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার দেবশ্রী মাইতির বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনে থানায় এফআইআর করলেন নিগৃহীতা যুবতী। প্রসঙ্গত, গত ১১জুন তমলুক থানায় এনিয়ে এফআইআর দায়ের হতেই শহরে আলোড়ন পড়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তমলুক থানার পুলিস।
উল্লেখ্য, গত ২৫মে কোলাঘাটের এক যুবতী তমলুক শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা জেলা নেতা দিব্যেন্দু রায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে ওই যুবতী তমলুক শহরেই ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ২০২৪ সালের ২২অক্টোবর ওই তৃণমূল নেতা পুরনো একটি মামলায় তাঁকে সাহায্য করার অছিলায় ভাড়াবাড়িতে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেছে। এনিয়ে প্রথমে ডাকযোগে থানায় অভিযোগ পাঠানো হয়। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে গত ২৫মে তমলুক থানার পুলিস এফআইআর জমা নেয়।
ওই যুবতীর দাবি, দিব্যেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য শাসক দলের কাউন্সিলার দেবশ্রীদেবী চেষ্টা করেন। প্রথমে আর্থিক টোপ দিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন। রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হমকি দেওয়া হয়। তারপরে ওই কাউন্সিলার সোশ্যাল মিডিয়ায় যুবতীর নাম করে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগে জানিয়েছেন। আইনত কোনও ধর্ষিতার নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আনা যায় না। এরপর ওই যুবতী তমলুক থানায় এফআইআর করেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও ওই যুবতী শহরের এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ওই ঘটনায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছিলেন। কয়েকজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছিল। ওই ঘটনায় শহরের তৃণমূল নেতারা যুবতীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। রাজ্য মহিলা কমিশনও তাঁর ভাড়াবাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল। তাঁর সুরক্ষায় ভাড়াবাড়িতে নিরাপত্তারক্ষীও দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪সালে লোকসভার ভোটের প্রাক্কালে এনিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল পদ্মপার্টিকে। ওই মামলায় তাঁকে সাহায্য করার অছিলায় দিব্যেন্দুবাবু তাঁকেধ ধর্ষণ করেছেন বলে যুবতীর অভিযোগ। ওই দাপুটে নেতার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য তৃণমূল কাউন্সিলার হুমকি দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছেন বলেও তাঁর অভিযোগ। যদিও দিব্যেন্দুবাবু তাঁর বিরুদ্ধে তোলা ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তৃণমূল কাউন্সিলার বলেন, ওই যুবতীর মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। দিব্যেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে মামলা তোলার জন্য টোপ কিংবা চাপ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে, আমি ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছি। একটা সময় আমি বিজেপির শহর মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী ছিলাম। সেই সময় আচমকা সংগঠনে ওই যুবতীর আবির্ভাব ঘটে। তাঁর চালচলন, কথাবার্তা আমার একদম ভালো লাগত না। সেই বিষয়টি আমি ফেসবুকে লিখেছি।