• রাজ্য সম্মেলন ছেড়ে প্রতিনিধিরা ঝাঁক বেঁধে ঘুরে বেড়ালেন হলদি নদীর তীরে
    বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: একদিকে শীততাপনিয়ন্ত্রিত অডিটোরিয়ামে সংগঠনের নীতি নির্ধারণ নিয়ে গুরুগম্ভীর আলোচনা চলছে, বসছে একের পর এক কমিশন। অন্যদিকে, সংগঠনের নবীন প্রবীণ সব প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা ব্যস্ত হলদির তীরে হাওয়া খেতে। সম্মেলন ছেড়ে হলদিয়ার মেরিন ড্রাইভে ঝাঁক বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সিটুর রাজ্য সম্মেলনে আসা ডেলিগেটরা। কেউ জাহাজের সঙ্গে, কেউ নৌকোর সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। আবার দল বেঁধে আলুকাবলি খেলেন কেউ কেউ। ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়ানোর সঙ্গে ঘরোয়া গল্পে মাতলেন তাঁরা। এদিন দুপুর গড়াতেই দেখা যায় সম্মেলন ছেড়ে বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিরা টোটো ভাড়া করে নদীর তীরে চলে আসছেন। তাঁদের এভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে বাঁকা মন্তব্য করতে ছাড়লেন না স্থানীয়রা। 

    শুক্রবার থেকে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর ১৩ তম রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে হলদিয়ায়। ১৩ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত হলদিয়া টাউনশিপে সিপিটি অডিটোরিয়ামে ৩ দিনের ওই সম্মেলন চলছে। পঁচিশ বছর পর এমন একটি সময়ে এখানে সম্মেলন হচ্ছে, যখন সিপিএমের ভোট শতাংশ কার্যত তলানিতে। ভোটের হার ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তাছাড়া কারখানাগুলিতে সিটুর চিহ্নমাত্র নেই। রাজ্যে লালদুর্গ হিসেবে পরিচিত বন্দর নগরীতে ২০০০ সালে শেষবার সিটুর রাজ্য সম্মেলন হয়েছিল ওই একই অডিটোরিয়ামেই। ওই সময়ে তমলুকের সাংসদ ছিলেন সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। স্বভাবতই পঁচিশ বছর আগে এবং পরে সিটুর দু’টি রাজ্য সম্মেলন এবার রাজনৈতিক মহলের চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে শিল্পশহর হলদিয়ায়। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দু’টি সম্মেলনের মধ্যে অবশ্যই ফারাক রয়েছে। সেই সব নিয়ে মানুষের মধ্যে চর্চাও রয়েছে।

    এবার হলদিয়ায় সিটুর রাজ্য সম্মেলনে এক হাজার প্রতিনিধি এসেছেন। তবে এই সম্মেলন নিয়ে হলদিয়ায় শ্রমিক মহলে কোনও উচ্ছ্বাস চোখে পড়েনি। সিটুর রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য শাসমল, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়ক বলেন, পঁচিশ বছর আগে বাম আমলে সম্মেলন হয়েছিল হলদিয়াকে আরও বড় শিল্পাঞ্চল গড়ার লক্ষ্যে। আজ সম্মেলন হচ্ছে বামেদের গড়ে তোলা হলদিয়াকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। এটাই ফারাক। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সভাপতি ও বিজেপি নেতা প্রদীপ বিজলি বলেন, ঘুরে দাঁড়ানোর যে উদ্দেশ্য নিয়ে সিটু হলদিয়ায় রাজ্য সম্মেলন করছে, তা দিবাস্বপ্ন। সিটুর অত্যাচার হলদিয়ার শ্রমিকরা এখনও ভুলে যাননি। হলদিয়ার শহর তৃণমূলের সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, সিটুর সময় পার্টি অফিস থেকে কারখানায় নিয়োগ হতো, পিএফ, ইএসআই জমা পড়ত না। এখন স্বচ্ছতার সঙ্গে শ্রমিক নিয়োগ হয়। শ্রমিকরা মুখ ফিরিয়েছে বলেই তো বামেরা হলদিয়া শূন্যে পরিণত হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)