ঘাটালে স্লুইস গেটগুলির কাজের গতিপ্রকৃতি পরিদর্শন সেচমন্ত্রীর
বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটাল মহকুমায় পাঁচ জায়গায় স্লুইস গেট তৈরি করার জন্য নদীবাঁধ কাটা অবস্থায় রয়েছে। তাই নদীতে একটু জলস্ফীতি হলেই ঘাটাল শহর সহ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মহকুমার বাসিন্দারা। আতঙ্কে প্রহর গুণছেন মহকুমার কয়েক লক্ষ মানুষ। তাই স্লুইস গেটগুলির কাজের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে এলেন রাজ্যে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি শনিবার ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি স্লুইস গেটই পরিদর্শন করলেন। মানসবাবু স্লুইস গেটের সামনে সেচদপ্তরের আধিকারিকদের কাছে জানতে চান, আর কতদিন সময় লাগবে স্লুইস গেটগুলি তৈরি করতে? সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে জানান, পুরোপুরি কাজ শেষ হতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস হবে। তবু নদীর জলস্ফীতি হলে যাতে ওই গেটের অংশ দিয়ে জল প্রবেশ না করে তেমনই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
ঘাটাল মহকুমার রূপনারায়ণ নদের কৈজুড়ি, কুমারচক, রানিচক এবং জোৎকানুরাম গড়ে একটি করে মোট চারটি এবং ঘাটাল শহর লাগোয়া গোবিন্দপুরে শিলাবতীর বাঁধে একটি স্লুইস গেট ছিল। বর্তমানে প্রায় সাড়ে দশ কোটি টাকা দিয়ে ওই পাঁচটি গেটকে নতুন করে আধুনিকীকরণ করার কাজ চলছে।
গেটগুলি তৈরি করার জন্য বাঁধটিকে আড়াআড়িভাবে কেটে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই কংক্রিটের ঢালাই করে স্লুইসগেট তৈরির কাজ চলছে। নদীতে যদি একটু জলস্ফীতি হয় তাহলে ওই পাঁচটি কাটা বাঁধের জায়গা দিয়েই ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীর জল বিনা বাধায় প্রবেশ প্লাবিত করে দেবে। ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্লুইস গেটের প্রয়োজন ছিল কিন্তু বর্ষার মুখে নদী বাঁধ কেটে স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু করা ঠিক হয়নি। আর তা করতে গিয়েই মহকুমার বাসিন্দাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এদিন আমি নিজে প্রত্যেকটি নির্মীয়মাণ স্লুইস গেটগুলি দেখলাম। সঙ্গে সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররাও ছিলেন। রানিচক ছাড়া চারটি গেটেরই ৮০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তাই ঘাটালবাসীদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বিষয়টি নিয়ে লেগে রয়েছেন। গেটের কাজ পরিদর্শনের শেষে ঘাটাল টাউন হলে প্রেসমিট করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। ২০১৫ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার খাল খনন, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, বাঁধ রক্ষণের জন্য একটি টাকাও বরাদ্দ করেনি। বাম আমলে মাস্টার প্ল্যানের শিলান্যাস হলেও এক টাকারও কাজ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীই শুধু ঘাটালের মানুষের দুর্দশার কথা ভেবেছেন। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের মধ্যে ২৪টি ব্রিজ, ১৪টি স্লুইস গেট ৩৬টি খাল সংস্কার সহ বহু কাজ করা হবে। এদিনের টাউন হলের মিটিংয়ে সেচদপ্তরের মুখ্যসচিব মণীশ জৈন, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার, ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস, জনপ্রতিনিধিরা সহ সেচদপ্তরের পদস্থ আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়াররাও ছিলেন। • নিজস্ব চিত্র