নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। তারমধ্যেই লোডশেডিংয়ে কার্যত নাজেহাল হচ্ছেন বাসিন্দারা। এই গরমের মধ্যে শুক্রবার রাতভর বহরমপুর ব্লকের নগরাজল টিকটিকিপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় প্রায়দিনই লোডশেডিং হচ্ছে। বহুবার বিদ্যুৎ দপ্তরে জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি। শুক্রবার রাতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিদ্যুৎ দপ্তরে বহুবার জানালেও রাতভর কারও দেখা মেলেনি। হয়নি সমস্যার সমাধানও। শনিবার সকালে বিদ্যুৎকর্মীরা এলাকায় পৌঁছলে বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা বিদ্যুৎকর্মীদের আটক করে রাখেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
টিকটিকিপাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, সামান্য জোরে হাওয়া দিলেই এখানে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিনেরবেলা তীব্র গরমে মাঝেমধ্যেই লোডশেডিং হচ্ছে। শুক্রবার প্রায় সারারাত বিদ্যুৎ ছিল না। গ্রামে বাস করি বলে কি আমরা মানুষ নই? প্রতিদিন বিদ্যুতের বিল বাড়াচ্ছে, এদিকে পরিষেবার কোনও ঠিক নেই। একটিমাত্র ট্রান্সফর্মার বিশাল এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। অনেকেই বাড়িতে এসি লাগিয়েছে। বিদ্যুতের ঘাটতি হলেই ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাচ্ছে।
রাজধরপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সাইফুল ইসলাম বলেন, গত পাঁচদিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। বারবার বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। একদিন ঠিক করে দিয়ে যাওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ফের লোডশেডিং শুরু হয়। তাই মানুষজন এদিন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার লালবাগ, কান্দি, ডোমকল, জঙ্গিপুর এবং বহরমপুর সদর মহকুমায় ঘনঘন লোডশেডিংয়ের জেরে মানুষ নাজেহাল হচ্ছে। তীব্র ভ্যাপসা গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে কাহিল হয়ে পড়ছে শিশু ও বয়স্করা। এদিন বহরমপুর শহরেও দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে বহরমপুরের রানিবাগান সহ শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় অল্প সময়ের জন্য লোডশেডিং হয়। তাতে বিরক্ত সাধারণ মানুষ।
রানিবাগানের বাসিন্দা অম্লান সেন বলেন, সারা সপ্তাহ অফিস করি। ওখানে অসুবিধা হয় না। শনি, রবিবার বাড়ি আসি। এই দু’দিন প্রায়ই দেখছি লোডশেডিং হচ্ছে। বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা, বাচ্চারা রয়েছে। এই গরমে দুপুরের দিকে বিদ্যুৎ না থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, জেলার কোথাও যাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট না হয়, তার উপর নজর রয়েছে। আমরা সব রকমভাবে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। নিজস্ব চিত্র