সংবাদদাতা, বোলপুর: দুই ছেলে মেয়ের বাবাকে ‘বশে’ আনার চেষ্টা করছিল এক বধূ। তার জন্য করা হচ্ছিল তুকতাক। এমনই অভিযোগে শনিবার বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের পূর্ব বাহাদুরপুরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল। প্রথমে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা হয়। পরে হাতাহাতি। সেই সময় নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে কোপ মারে ওই বধূ। তার শরীর থেকে হাত বিছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়। এরপর গলাতেও কোপানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, পাড়ার লোকজন ধরে ফেলায় ওই ছাত্র প্রাণে রক্ষা পায়। প্রথমে তাকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনায় পুলিস দু’জনকে আটক করলেও মূল অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজে পুলিস তল্লাশি শুরু করেছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বাহাদুরপুরে ওই দু’টি পরিবার বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছে। নবম শ্রেণির ওই ছাত্রের বোন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাবার উপর ওই বধূর কুনজর ছিল বলে অভিযোগ। সে ওই ছাত্রের বাবাকে বশে আনার চেষ্টা করছিল। যার জন্য মাঝে মধ্যেই সে তুকতাক করত। আর তারপর বাড়ির উঠানে সিঁদুর, কাপড়ের টুকরো ও কালা জাদুর সামগ্রী ফেলত। এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। শনিবারও একই কারণে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা হয়। পরে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। দু’পক্ষই একে অপরের বাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। তারপর ওই ছাত্রকে কাটারির কোপ মারা হয়।
ওই ছাত্রের মায়ের অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে কুনজরে দেখত ওই বধূ। স্বামীকে সে বশ করার চেষ্টা করছিল। তুকতাক করত। সেই জন্য তাঁদের বাড়ির উঠানে সিঁদুর, কাপড়ের টুকরো সে ফেলত। এসব ফেলতে গিয়ে সে হাতেনাতে ধরাও পড়ে। এতসব করেও সে স্বামীকে ‘বাগে’ আনতে পারছিল না। তাই মাস ছয়েক আগে সে স্বামীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলাও করে। কিন্তু, এদিন ফের তুকতাকের সামগ্রী উঠানে ফেলে, যা নিয়ে বচসা হয়। সেই সময় স্বামীকে মারধর করে ওই বধূর স্বামী ও ছেলে। তখন আমার ছেলে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাতে রেগে গিয়ে ওই বধূ ছেলের গলায় কাটারির কোপ মারার চেষ্টা করে। হাত তুলে তা আটকানোর চেষ্টা করে। তখন ছেলের ডান হাতে কাটারির কোপ পড়ে। আর তাতেই ছেলের হাতটি কেটে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস আসে। তবে তার আগেই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পুলিস জানিয়েছে, দু’জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নিজস্ব চিত্র