• খুন করতে কেনা হয় কার্বলিক অ্যাসিড, নজরে ওষুধের দোকান
    বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: মিতার স্বামীকে খুনের জন্য একটি ওষুধের দোকান থেকে কার্বলিক অ্যাসিড কেনে অভিজিৎ। সে মিতাকে ওই অ্যাসিড দিয়ে স্বামীকে খাওয়ানোর কথা বলে। তদন্তে ধৃতরা অগ্রদ্বীপের ওই ওষুধের দোকানটি পুলিসকে চিনিয়ে দেয়। ওই দোকানে ওষুধ ও বেবিফুড রাখার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু, অ্যাসিড রাখার কোনও বৈধ লাইসেন্স নেই। তা সত্ত্বেও কেন সেখানে অ্যাসিড বিক্রি করা হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্ত করছে কাটোয়া থানার পুলিস। শনিবার ধৃত প্রেমিক অভিজিৎ বাগদিকে কাটোয়া মহকুমা এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতেরর নির্দেশ দেন। 

    প্রসঙ্গত, গত ৭জুন রাতে কাটোয়ার আমুল গ্রামের মহাদেব দাসকে খুন করার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। প্রথমে মদের সঙ্গে কার্বলিক অ্যাসিড মিশিয়ে স্বামীকে খাইয়েছিল মিতা। তারপর তাঁর মাথার পিছনে বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে বালিশ চাপা দেওয়া হয়েছিল। পরকীয়ায় বাধা দেওয়াতেই রাগ ছিল মিতার। পরের দিন কাকভোরে খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্বামী স্ট্রোকে মারা গিয়েছে বলে শাশুড়িকে ডেকে আনে মিতা। হঠাৎ মহাদেববাবু মারা যাওয়ার কথা শুনে পাড়াপ্রতিবেশীরাও আসেন। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা থানায় খবর দেন। কাটোয়া থানার পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এরপরেই পুলিস মৃতের স্ত্রী মিতাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বীরভূমের নানুর থেকে প্রেমিক অভিজিৎকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

    পুলিস জানতে পেরেছে, মিতার সঙ্গে একাধিক পুরুষের সম্পর্ক ছিল। তারমধ্যে অভিজিৎ অবিবাহিত থাকায় তাকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার পাততে চেয়েছিল মিতা। কিন্তু, তার এই নতুন জীবনের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মহাদেববাবু। তাই তারা দু’জনে মহাদেববাবুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে।

    পুলিসের দাবি, ধৃতরা স্বীকার করেছে তারা কার্বলিক অ্যাসিড খাইয়ে মহাদেববাবুকে মারতে চেয়েছিল। সেইমতো অভিজিৎ কিনে এনেছিল ওই অ্যাসিড। মিতা মদের সঙ্গে কার্বলিক অ্যাসিড মিশিয়ে তা স্বামীকে খাওয়ায়। কিন্তু, তাতেও মহাদেববাবু মরছে না দেখে মিতা বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে শেষে মুখে বালিশ চাপা দেওয়া হয়। কারণ মহাদেববাবু বেঁচে গেলে মিতার সব চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যেত। 

    প্রশ্ন উঠছে, ওষুধের দোকানে যেখানে 

    অ্যাসিড বিক্রি করতে গেলে বৈধ অনুমতির দরকার হয়। সেখানে অগ্রদ্বীপের ওই ব্যবসায়ী কীভাবে দিনের পর দিন অ্যাসিড ওষুধের দোকানে অ্যাসিড বিক্রি করছিলেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন, পুলিসি নজরদারির অভাবেই অনেক ওষুধের দোকানের অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে। 

    তাছাড়া অ্যাসিড বিক্রি করতে গেলে ক্রেতার পরিচয়পত্র রাখতে হয়। পুলিস জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)