মালদহে রামকেলি মেলার উদ্বোধন, বিশেষ সুবিধা ভক্তদের জন্য
বর্তমান | ১৫ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: চৈতন্য মহাপ্রভুর মালদহে আগমন উপলক্ষ্যে রামকেলি মেলার সূচনা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ তিনদিন ধরে এই মেলায় অংশ নেন। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে রামকেলি ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ নামে পরিচিত। তাই রামকেলিতে হাজির হওয়া বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে তীর্থযাত্রা বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। শনিবার মেলার উদ্বোধন করেন জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া, পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা ঘোষ বর্মন। তার আগে এদিন জেলা পরিষদের উদ্যোগে গেট ও শৌচালয়ের উদ্বোধন করা হয়।
জেলাশাসক বলেন, ১৫, ১৬ এবং ১৭ জুন মেলা চলবে। তারপর ভাঙামেলা চলে। পানীয় জল থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের মাধ্যমে শেড তৈরি করা হয়েছে ভক্তদের সুবিধার জন্য। ১৫১৪ খ্রীস্টাব্দ। আমের শহর মালদহতে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর দুই বিশ্বস্ত পার্ষদ রূপ ও সনাতন গোস্বামীর। সেই থেকেই মালদহ জেলার ইংলিশবাজার ব্লকের মহদিপুরে রামকেলি ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ হিসাবে পরিচিত। পরবর্তীতে অখণ্ড বঙ্গের শাসক সুলতান হুসেন শাহ’র দরবারের দুই উচ্চপদস্থ কর্মী রূপ গোস্বামী, যিনি রাজ দরবারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী সনাতন গোস্বামী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হন। পরবর্তীতে নিজেদের জীবনযাপন ছেড়ে ছুটে যান বৃন্দাবনে। লিপিকা বলেন, ঐতিহ্যবাহী ৫১১ তম রামকেলি মেলার উদ্বোধন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৈষ্ণব এবং পূণ্যার্থীরা আসেন। তাঁদের সুবিধার্থে জেলা পরিষদ থেকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গেট এবং তিনটি শৌচাগার করা হয়েছে। রামকেলি আরও বেশি বিখ্যাত হয়ে ওঠে বৈষ্ণব ধর্মচর্চার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। কথিত আছে, মালদহের রামকেলিতে আড়াইদিন অতিবাহিত করেছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। তাঁর পদচিহ্ন এখনও সংরক্ষিত রয়েছে এখানে। বৈষ্ণব মতে বিশ্বাসী অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ আজও তাই ছুটে আসেন এই জায়গায়। রামকেলিতে মহাপ্রভুর পদচিহ্নের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং রূপ ও সনাতন গোস্বামীর ভক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। নিজস্ব চিত্র