কর্মসূত্রে বাবা থাকেন মুম্বাইয়ে। আর ছেলে পড়াশোনা করে গ্রামের মাদ্রাসায়। ছুটি পেয়ে বাড়িতে এসে সৎ-মায়ের কাছেই শুয়েছিল সে। শনিবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রহস্য। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইকবাল (১৪) নামের ওই নাবালকের সৎ-মা শানওয়ারা বিবিকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার ঘটনা।
ইকবালের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। শানওয়ারা পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে সিলিং ফ্যানের আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে ইকবালের। তবে তাঁর কথা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি পুলিশের। কথায় একাধিক অসঙ্গতি থাকার কারণেই শানওয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক আধিকারিক।
পুলিশ সূত্রে খবর, দাঁতন থানার তুরকার বাসিন্দা বছর ৩৭-র রবিউল বক্স কর্মসূত্রে থাকেন মুম্বাইয়ে। সেখানকার একটি সংস্থায় দর্জি হিসেবে কাজ করেন তিনি। সেখানেই খুশবু বিবি নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। ইকবাল ছোট ছেলে। বছর কয়েক আগেই খুশবুর সঙ্গে রবিউলের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তার পরে ছোট ছেলে ইকবালকে দাঁতনের সাবড়া এলাকার একটি আবাসিক মাদ্রাসাতে ভর্তি করেন রবিউল। বছর তিনেক আগে তিনি বিয়ে করেন পূর্ব মেদিনীপুরের খড়াই এলাকার বাসিন্দা শানওয়ারা বিবিকে। বছরখানেক আগে প্রসব করার সময়ই শানওয়ারার কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দিন দশেক আগে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরে ইকবাল। শুক্রবার রাতে সে তার এক সম্পর্কীয় ভাইয়ের সঙ্গে শুয়েছিল শানওয়ারা-র সঙ্গেই শুয়েছিল। ভোররাতে, সিলিং ফ্যানে ইকবালের গলা কেটে গিয়েছে বলে চিৎকার করে শানওয়ারা। ইকবালকে স্থানীয় খন্ডরুই গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ ও বাড়ির লোকজনকে শানওয়ারা বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, ইকবাল রাতে শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য হঠাৎই বিছানোর উপরে উঠে দাঁড়ায়। তাতেই হাইস্পিড সিলিং ফ্যানে তার গলা কেটে যায়। তবে শানওয়ারার ওই যুক্তি মানতে চায়নি পুলিশ।
এক আধিকারিক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কথায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে রবিউলকেও। শানওয়ারা ইকবালকে খুন করেছেন কী না তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।