স্কুলে যাওয়ার নাম করে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া। কিংবা ছুটির পরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে দেরি করে বাড়ি পৌঁছনোর দিন এ বার শেষ। স্কুলে পড়ুয়ারা কখন ঢুকছে কখন বেরোচ্ছে এ বার থেকে সে সব কিছু জানতে পারবেন অভিভাবকরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের একটি স্কুল উদ্যোগ নিয়ে ‘ফেস রেকগনিশন অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম’ বসিয়েছে। কিন্তু কী ভাবে কাজ করবে এই মেশিন? কী বলছেন অভিভাবকরা?
সবংয়ের স্বনামধন্য ও সুপ্রাচীন স্কুল হিসেবে পরিচিত দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদন। সেখানেই এই মেশিন বসানো হয়েছে। পড়ুয়ারা যখনই স্কুলে ঢুকবে, তখনই অভিভাবকদের মোবাইলে পৌঁছে যাবে নোটিফিকেশন। আবার ছুটির পর যখন তারা স্কুল থেকে বেরোবে ঠিক সেই সময়ে একই ভাবে নোটিফিকেশন পাবেন অভিভাবকেরা। এ জন্য রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অভিভাবকদের একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয়েছে। স্কুলের একেবারে গেটের সামনেই এই অত্যাধুনিক মেশিন বসানো হয়েছে।
চলতি মাসে গরমের ছুটির পর থেকেই সেই স্কুলে ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম চালু হয়ে গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান বলেন, ‘বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীই অন্যত্র চলে যায়। আমাদের কাছে এই অভিযোগ আসে। বিশেষত, একাদশ-দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের শেষে অবিভাবকদের যখন আমরা ওই ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার কম বলে জানাই, তখন তাঁরাও অবাক হয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। পড়ুয়ারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছচ্ছে কি না, তা নিয়ে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকেন। আমাদের স্কুলে বিভিন্ন সময়ে নানা অনুষ্ঠান হয়। ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি পৌঁছতে দেরি করলে, অভিভাবকরা দুশ্চিন্তা করেন। তাই, চলতি শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগেই আমরা শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। অবশেষে অত্যাধুনিক এই যন্ত্র আমরা স্কুলে লাগিয়েছি। এ বার অনেক সমস্যা দূর হবে।’
মানসকুমার জানা নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। রাস্তাঘাটের আজকাল যা পরিস্থিতি, বাড়ি থেকে বেরোনোর পরই দুশ্চিন্তা হয়। এই ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স সিস্টেমের ফলে ফোনে নোটিফিকেশন আসে। এখন অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারছি।’ শ্রাবণী দাস নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই সিস্টেম চালু করেছেন। আমরা খুব খুশি। সবকিছুই বাড়িতে বসে জানতে পারছি। অন্যান্য স্কুলেরও এমনটাই করা উচিত। এতে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে পারবেন।’