নকিব উদ্দিন গাজী: সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। তার পরেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে পাড়ি দেবেন মৎস্যজীবীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডায়মন্ড হারবার কাকদ্বীপ নামখানা ফ্রেযারগঞ্জ এলাকা থেকে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে পাড়ি দেবেন অচিরেই। তাঁরা এর আগে যে প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা সেরেও ফেলেছেন প্রায়।
আশাবাদী
বেশ কয়েক বছর ধরে মনমতো ইলিশ মাছ পাচ্ছেন না মৎস্যজীবীরা। এ বছর তাঁরা একটু আশাবাদী। কেননা, মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ক্ষেত্রে এবার নতুন প্রযুক্তি এসেছে। তাই আগের-আগের বারের চেয়ে এবার তাঁরা কিছুটা হলেও বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরতে সক্ষম হবেন, এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
কী এবারের নতুন উদ্যোগ?
এবার মৎস্য দফতর জিপিএস ট্র্যাকের ব্যবস্থা করেছে। মাছ ধরতে গিয়ে যাতে অজান্তে সীমানা লঙ্ঘন না হয়ে যায়, সেটা দেখাই এই প্রযুক্তির লক্ষ্য। তেমন ঘটলে তার আগাম সর্তকতা আসবে। পাশাপাশি আবহাওয়ার সর্তকতা, ট্রলারে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তার সতর্কতা এবং গভীর সমুদ্রে মাছের ঝাঁক কোন এলাকায় আছে-- এই সব জরুরি বিষয়ের তথ্য জোগাবে এই ব্যবস্থা। প্রতিটি ট্রলারেই এমন ব্যবস্থা থাকছে বলে জানা গিয়েছে। এতে দুর্ঘটনার আগাম সর্তকতা পাওয়া যাবে মোবাইলের মাধ্যমে।
খরচ বেড়েছে
এদিকে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে বরফের দাম কিছুটা হলেও বেড়েছে, জালের দামও বেড়েছে। তা ছাড়া মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার উপকরণের জন্যও বেশ কিছুটা খরচ বহন করতে হয়। একটি ট্রলার ছাড়তে মোটামুটি খরচ হয় দুলক্ষ টাকার উপরে। ইলিশ মাছ এবারে ভালো হলে এবং দাম ভালো পাওয়া গেলে, খরচটা উঠে আসবে, এমনই ভাবনা তাঁদের।
মা গঙ্গাকে স্মরণ করে
এক-একটি ট্রলারে ১৮ জন ২০ জন করে মৎস্যজীবী থাকেন। প্রতিবারের মতো এবারও সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল-- দুমাস। সেটা কাটছে আগামী কাল, ১৫ জুন। এর পরেই গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়ার ছাড়পত্র পাবেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের প্রস্তুতিও শেষের পথে। শেষ মুহূর্তে বরফ, তেল মৎস্যজীবীদের খাবার, মাছ ধরার উপকরণ ইত্যাদি ট্রলারে তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। আবহাওয়া ভালো থাকলেই মাছের ঝাঁক ধরা দেবে মৎস্যজীবীদের জালে। তাই মা গঙ্গাকে স্মরণ করে তাঁরা পাড়ি দেবেন অচিরেই।