• লোকাল ট্রেনে সিট নিয়ে বচসা, ধাক্কাধাক্কিতে ট্রেন থেকে পড়ে গেলেন যাত্রী, কাটা গেল পা...
    আজকাল | ১৫ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের রানাঘাট গেলপিন লোকাল। ট্রেন ছাড়ার কিছু পর থেকেই শুরু হল সিটে বসা নিয়ে বচসা। ট্রেনের এক যাত্রী নিজেকে রেলের বড় কর্তা বলে দাবি করেন এবং নিজের ক্ষমতাবলে সিট দখল করে বসেছিলেন। অভিযোগ, সেখানে উপস্থিত যাত্রীর প্রতিবাদ করলেই বচসা শুরু হয়। অশান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে ওঠে ব্যারাকপুর থেকে এবং দমদমে গিয়ে সমস্ত ঘটনার অবসান। ধাক্কধাক্কির জেরে ট্রেন থেকে পড়ে পা কাটা পড়ল এক যাত্রীর।

    শুক্রবার সকালে চাকদা থেকে ট্রেনে চাপেন সরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত জগদীশচন্দ্র সরকার। বয়স ৫৭ বছর। যিনি পূর্বে ভারতীয় সেনায় কর্মরত ছিলেন। সেনা থেকে অবসরের পরে ব্যাঙ্কে কর্মরত ছিলেন। ট্রেনে অশান্তি চলছিল রানাঘাট থেকে ট্রেন ছাড়ার পর থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার করছিলেন রেলের সেই স্বঘোষিত আধিকারিক। প্রতিবাদ করেন জগদীশ। তিন জনের সিটে কেন চার জন বসবেন তাই নিয়েই অশান্তি তুঙ্গে ওঠে। এরপরেই রেলের ওই কর্মী আরপিএফ-কে ফোন করে ডেকে পাঠান। ব্যারাকপুর থেকে ট্রেনে ওঠেন বেশ কিছু আরপিএফ কনস্টেবল এবং একজন অফিসার। 

    আরপিএফ গোটা বিষয়টি নজর রাখছিল। জগদীশবাবু আরপিএফ-কে অভিযোগ করেন রেলের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। বিষয়টিকে সমাধানেরও চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতি বিগড়ে যায় দমদম স্টেশনে ঢোকার কিছু আগে। তর্ক-বিতর্ক ওঠে তুঙ্গে। এরপর দমদম স্টেশনে নামার পূর্ব মুহূর্তে সকাল ৯টা নাগাদ সেই রেলকর্মী এবং আরপিএফ-এর সঙ্গে যাত্রীদের বচসা বেঁধে যায়।

    আরপিএফ একজন যাত্রীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে জগদীশ এবং কয়েকজন মিলে বাধা দেন। তারপরেই অভিযোগ, জগদীশকে জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেই ট্রেন থেকে পড়ে যান তিনি। আর ঠিক সেই সময়ই অপর দিক থেকে আরও একটি  ট্রেন ঢুকছিল। ঠিক সেই মুহূর্তেই জগদীশবাবু লাইনে পড়ে যান। ট্রেনের ধাক্কায় তিনি ছিটকে পড়ে যান এবং গুরুতর আহত হন। দমদম স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে সকাল ৯টা থেকে সওয়া ৯টার মধ্যে। 

    আহত অবস্থায় জগদীশকে নিয়ে আসা হয় আরজি কর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা এবং  অস্ত্রোপচার করে তাঁর ডান পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আরজিকরেই চিকিৎসাধীন। তাঁর এক সহযাত্রী জানান, কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন জগদীশ বাবু। মানুষের উপকার করতে গিয়েই আজকে তার পা-টাই চলে গেল। 

    জগদীশের মেয়ের অভিযোগ, "যেই ব্যক্তি নিজেকে রেলের আধিকারিক বলে দাবি করেছেন, তাঁর অমানবিকতা এবং আরপিএফ-এর অমানবিকতার কারণে আমার বাবার 'ডান পা' কেটে বাদ গিয়েছে।“ 

    এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে কথা বলেছিল আজকাল ডট ইন। রেলের এক আধিকারিক জানান, সিটে বসা নিয়েই মূলত বচসা এবং যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আরপিএফ তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জগদীশবাবু দমদম স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে পড়ে যান লাইনে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরপিএফ লেডি কনস্টেবলও লাইনে ঝাঁপ দেন। ফলে ঘটনায় লেডি কনস্টেবলও গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনিও বর্তমানে চিকিৎসাধীন।“
  • Link to this news (আজকাল)