সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্দারণিতে ভাঙা যাবে না হোটেল, হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৪ জুন ২০২৫
মন্দারমণিতে হোটের ভাঙার সিদ্ধান্তের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হোটেলগুলি ভাঙা যাবে না। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। শুক্রবার মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচার অমৃতা সিনহা। রাজ্যে কোস্টাল রেগুলেশন জোন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকা না থাকায় বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
মন্দারমণির সমুদ্রপাড় দখল করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল একাধিক হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কয়েকমাস আগে এলাকার এ রকম প্রায় ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দেয় জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই নির্দেশ মেনে হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন হোটেল মালিকরা। এরপরই জেলাশাসকের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। এজলাসে কেন্দ্রের কাছে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানতে চান, এই রাজ্যে কোস্টাল রেগুলেশন জোন কতটা? সেই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, রাজ্যে আদৌ কোনও কোস্টাল রেগুলেশন জোন নেই। এই উত্তরে বিষ্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, কোস্টাল রেগুলেশন জোন হল সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার কত দূর পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা। কেন্দ্রের তরফেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়ে থাকে। কী কারণে কোস্টাল রেগুলেশন জোন সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা নেই সেই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। এ বিষয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী জানান, এই বিষয়ে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁরাই জানিয়েছেন, এ রকমভাবে কোনও এলাকা চিহ্নিত করা হয়নি। অশোকবাবু আরও বলেন, জাতীয় পরিবেশ আদালতের মূল বেঞ্চ দিল্লিতে রয়েছে। তাই এই মামলার শুনানি হাইকোর্টে হতে পারে না।
অন্যদিকে, পরিবেশ দপ্তরের আইনজীবী নয়ন বিহানী বলেন, এ বিষয়ে রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের কোনও হাত নেই। কাকে কী অনুমতি দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রীয় বনদপ্তর ঠিক করে। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে কার্যত বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তিনি জানান, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য হোটেল মালিকদের সমর্থন করে যাচ্ছে। অন্যদিকে কেন্দ্র কোনও সদুত্তর দিতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে আদালত শুধু দেখবে আইন অনুযায়ী এখানে হোটেল চালানো যায় কি না। কেন্দ্র শেষ সুযোগ চেয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে হোটেল ভাঙার সিদ্ধান্তের উপর আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ জারি রাখল হাইকোর্ট।