এই সময়, উদয়নারায়ণপুর: তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি মদ্যপ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে গালিগালাজ করেছেন। তারই খেসারত হিসেবে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে কোমরে দড়ি বেঁধে কান ধরে উঠবোস করানোর অভিযোগ উঠল।
শুধু তাই নয়, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রকাশ্যে চড় মারার ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা এই সময় যাচাই করেনি) ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেনস্থা করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তারও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সিভিক ভলান্টিয়ারকে চড় মারার ছবি ভাইরাল হয়েছে, তাঁর নাম শ্রীধর চক্রবর্তী।
তিনি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর বিধানসভার পেঁড়ো থানার অধীনে কাজ করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সিভিক ভলান্টিয়ারকে চড় মারার ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার, পেঁড়ো থানার বসন্তপুর এলাকায়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কিছু লোক সিভিক ভলান্টিয়ারকে দড়িতে বেঁধে কান ধরে উঠবোস করাচ্ছেন। সেখানে উপস্থিত হওয়া লোকজনকে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের উদ্দেশে বলতে শোনা যাচ্ছে, কেন তুই দিদিমণি এবং দলের সম্পর্কে গালাগালি করেছিস? কে তোকে গালিগালাজ করতে বলেছে?
তার জবাবে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বলেন, যা বলেছি, ভুল করেছি। মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করে আমি ভুল করেছি। সেই সঙ্গে তিনি ক্যামেরার সামনে দাবি করেন, লালুদা নামে স্থানীয় কোনও বিজেপি নেতা তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে গালিগালাজ করতে বলেছেন। লালু বিজেপি’র স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি।
লালু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করার জন্য তিনি লালুকে কোনও ভাবেই প্ররোচিত করেননি। বিজেপি’র হাওড়া গ্রামীণ সাংগঠনিক জেলার সহকারী সভাপতি রমেশ সাধুখাঁ এ দিন অভিযোগ করেছেন, বিজেপি মণ্ডল সভাপতিকে ফাঁসানোর চক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সিভিক ভলান্টিয়ারকে উঠবোস করার ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা আমতা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কাজি সফিকুর রহমান বলেন, ‘সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেনস্থা করার ঘটনায় তৃণমূল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। তবে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর। তা নিয়ে স্থানীয় মানুষজন কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিলেন। এটা সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।’
তাঁর সংযোজন, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। হাওড়ার গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি আমরা খতিয়ে দেখছি। সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেনস্থা করার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আসছে, সেটা নিয়েও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’