• কড়াকড়িতে প্রকাশ্যে বহু ভুয়ো পাসপোর্টের আবেদন, দীর্ঘতর বকেয়ার তালিকাও
    আনন্দবাজার | ১৪ জুন ২০২৫
  • কড়াকড়ি শুরু হতেই সুফল মিলতে শুরু করেছে।

    এ দেশে ঢুকে ভুয়ো নথি দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে কয়েকশো বাংলাদেশি বিদেশে চলে গিয়েছেন বলে সম্প্রতি পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযোগ, নথি যাচাইয়ে পুলিশের ‘গাফিলতি’র সুযোগ নিয়েই ওই সব পাসপোর্ট তৈরি করেছিল অভিযুক্তেরা। সেই চক্রের আট জনকে গ্রেফতার করার পরে পাসপোর্টের নথি যাচাই নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করে লালবাজার। যার পরেই সামনে আসছে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে পাসপোর্টের একের পর এক আবেদন।

    লালবাজার সূত্রের খবর, নথি যাচাইয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। তখন থেকে চলতি মাস, অর্থাৎ জুন পর্যন্ত ভুয়ো নথি দিয়ে পাসপোর্টের আবেদনের প্রায় ১৫টি ঘটনা ধরা পড়েছে। যার ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন (এসসিও) ভবানীপুর থানায় ১৫টি মামলা রুজু করেছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ন’জনকে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করার অভিযোগ রয়েছে।

    সূত্রের খবর, ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি হওয়া ঠেকাতে আবেদনের সময়ে জমা দেওয়া নথির উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। লালবাজারের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া নথি আসল না জাল, তা জানার জন্য আগে সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হবে। সেই কর্তৃপক্ষ ওই নথি পরীক্ষা করবেন। আর সেই পরীক্ষা করতে গিয়েই ধরা পড়ছে জন্মের ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে পাসপোর্টের একের পর এক আবেদন।

    এক তদন্তকারী জানান, এখনও পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার পাঠানখালি পঞ্চায়েত, মালদহের মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত এবং হাওড়ার বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের নাম ব্যবহার করে দেওয়া জন্মের শংসাপত্র পাসপোর্টের আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, গোসাবার পাঠানখালি পঞ্চায়েতের নাম ব্যবহার করে বহু শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় আপাতত আতশকাচের নীচে পঞ্চায়েত-প্রধানের ভূমিকা। প্রয়োজনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

    পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, নথি যাচাইয়ে কড়াকড়ির ফলে পাসপোর্ট দিতে দীর্ঘ সময়ও লাগছে বলে অভিযোগ। নথি যাচাইয়ে সময় লাগার কারণ হিসাবে পুলিশ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, নতুন পাসপোর্টের আবেদন ও পুরনো পাসপোর্ট নবীকরণের সময়ে জমা দেওয়া নথির প্রতিলিপি আগে পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট নথি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখান থেকে সদর্থক উত্তর এলে তবেই সেই নথি পাঠানো হচ্ছে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে, বকেয়া পাসপোর্টের ভার লাঘবের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)