দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের ভোটার-তালিকায় নিউটন দাস নামে এক বাংলাদেশির নাম থাকায় শোরগোল পড়েছিল। নিজের নামে তিনি এ দেশের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড তৈরি করিয়েছিলেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। সে ভোটার কার্ড বাতিলের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রের খবর, ওই যুবকের এ দেশের নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণপত্র না-মেলায় বৃহস্পতিবার তাঁর ভোটার কার্ড বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কী ভাবে তাঁর নাম ভোটার-তালিকায় ঢুকল, কারা সে কাজে জড়িত, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনকে জমা দিতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত শুক্রবার বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মতো নিউটন দাসের ভোটার কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি সংবেদনশীল। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ মিললে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কয়েক বছর আগে চোরা-পথে সীমান্ত পেরিয়ে কাকদ্বীপে আসা নিউটন প্রভাবশালীদের সাহায্যে নিজের নামে যাবতীয় ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন বলে অভিযোগ। সরকারি নথি বলছে, নিউটন কাকদ্বীপের ১২৮ নম্বর বুথের ভোটার। তবে কয়েক বছর ধরে নিউটন বাংলাদেশে রয়েছেন এবং তিনি সেখানকার ভোটার বলে এলাকাবাসীর দাবি। ভোটার-তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত কাজের সময় নিউটনের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে কমিশন।
দিন কয়েক আগে আগে, সমাজমাধ্যমে ছড়ানো এক ভিডিয়োয় নিউটনকে দাবি করতে শোনা যায়, তিনি ২০১৬ সালে মন্টুরাম পাখিরাকে (কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক) ভোট দিয়েছিলেন। ভোটার কার্ড হারিয়ে গেলে, ২০১৮-তে বিধায়কের সাহায্যে নতুন কার্ড পান। বিধায়ক অবশ্য দাবি করেন, নিউটনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। নিউটনের ভোটার কার্ড বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে বিধায়কের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ফোন ধরেননি। এসএমএসের জবাব দেননি। তবে মথুরাপুরের তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদার বলেন, ‘‘কমিশনই ওঁর (নিউটনের) ভোটার কার্ড তৈরি করে দিয়েছিল। তারাই ভুল শুধরে, তা বাতিল করছে। ভাল উদ্যোগ।’’ বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অশোক পুরকাইত বলেন, ‘‘নিউটন একটা উদাহরণ। এমন অনেক বাংলাদেশি রয়েছেন, যাঁরা তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়ে ভোটার-তালিকায় নাম তুলেছেন। সকলের নাম বাদ দিতে হবে।’’