• ছুটি শেষে ফের সমুদ্রে পাড়ি, মিলবে কি রুপোলি ফসল?
    এই সময় | ১৪ জুন ২০২৫
  • এই সময়, দিঘা: ৬১ দিনের লম্বা ছুটি শেষ হয়ে গেল। বাঙালির রসনাতপ্তির গুরুভার কাঁধে নিয়ে আজ রাত থেকেই ফের সমুদ্রে পাড়ি দেবেন মৎস্যজীবীরা। ট্রলার আগে থেকেই প্রস্তুত। টার্গেট সাগরের রুপোলি ফসল।

    আশা-দ্বন্দ্ব নিয়েই সমুদ্রে রওনা হচ্ছেন তাঁরা। দিঘা-শঙ্করপুরের মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, প্রথম ফিশিং ভালো হলে সারা বছরই ভালো চলে। তাই, প্রথম দিনটা তাঁদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্যজীবীদের সংগঠনগুলি জানিয়েছে, প্রথম দিনেই ২৭০০ ট্রলার ও লঞ্চ সমুদ্রে পাড়ি দেবে।

    শঙ্করপুরের মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, সাধারণত জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে সমুদ্রে ইলিশের আনাগোনা শুরু হয়। ব্যান পিরিয়ডের মধ্যে চোরাগোপ্তা ভাবে যাঁরা সমুদ্রে মাছ শিকার করেছেন, তাঁদের জালে কমবেশি ইলিশের দেখা মিলেছে। তাই মৎস্যজীবীদের আশা, গত মরশুমের মতো ইলিশের আকাল এ বছরে হয়তো হবে না।

    কাঁথি মৎস্য দপ্তরের সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুমনকুমার সাহার কথায়, ‘দিঘার সমুদ্রে ইলিশ থাকে না, গভীর সমুদ্রের মাছ ইলিশ। ডিম পাড়ার জন্য মিষ্টি জলের খোঁজে উপকূলের দিকে আসে। অনুকূল পরিবেশ না হলে ইলিশের দেখা মিলবে কিনা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়।’

    তাঁর সংযোজন, ‘নানা কারণে গত কয়েক বছর ধরে দিঘার সমুদ্রে ইলিশের ঝাঁক আসছে না। গত কয়েক দিনে অল্পবিস্তর বৃষ্টি হয়েছে। তাই আশা করা যায় ইলিশ এ বার ভালোই পাওয়া যাবে।’

    দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘অনিশ্চয়তার মধ্যে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যান মৎস্যজীবীরা । তেল ও যন্ত্রাংশের দাম যে ভাবে বেড়েছে, তাতে ১০-১৫ দিনের ফিশিংর খরচ প্রায় ১ লক্ষ টাকা। তাই ভালো পরিমাণে ইলিশ জালে না উঠলে সে খরচ ওঠা এক প্রকার অসম্ভব।’

    দিঘার মৎস্যজীবীদের কথায়, ‘গত কয়েক বছরে সমুদ্রে সব ধরনের মাছের পরিমাণ কমেছে। বিদেশে রপ্তানিযোগ্য মাছের বাজারও কমেছে।’ মৎস্যজীবী অসিতকুমার জানা বলেন, ‘সমুদ্রে আর সে ভাবে মাছের দেখা মিলছে না। তাই নতুন মরশুমে কি হবে জানি না।’

    বগুড়ান জালপাইয়ের মৎস্যজীবী জ্যোৎস্না বরের কথায়, ‘একে জালে সে ভাবে মাছ উঠছে না। তার উপরে গত মরশুমে শুকনো মাছের দাম এখনও পাইনি। এই মরশুমে কী হবে জানি না।’

    অন্য দিকে, পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামলের অভিযোগ, এই মরশুমে প্রথম পনেরো দিনে ট্রলারগুলি বেশিরভাগ মাছ ধরে নেবে। ফলে, এ বছরও সে ভাবে ইলিশ–সহ অন্য মাছের দেখা মিলবে না।

  • Link to this news (এই সময়)