• খণ্ডঘোষে ৪ নাবালিকাকে বিয়ের পিঁড়ি থেকে ফিরিয়ে তারিফ কুড়াল প্রশাসন
    বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: খণ্ডঘোষের চার কন্যার গোপন ইচ্ছে পূরণ হতে দিল না পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। তাদের ইচ্ছে ছিল বৃহস্পতিবার রাতে মনের মানুষের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে। চুটিয়ে সংসার করবে। কিন্তু, বাদ সাধল বয়স। চার কন্যার বয়স ১৮বছরের নীচে। এই বয়সে বিয়ে করা আইনের চোখে অপরাধ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, নাবালিকাদের বিয়ে কখনই দেওয়া যাবে না। ওই নাবালিকাদের পরিবারের লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। জেলাজুড়ে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষের শাঁখারি পঞ্চায়েতের ১৬ বছরের এক নাবালিকার বিয়ের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। আধিকারিকরা খবর পেয়ে গ্রামে অভিযান চালান। বাড়ির লোকজন মুচলেখা দিয়ে নিস্তার পান। এরপরও ফের ওই নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে পরিবারের লোকজনকে শ্রীঘরে যেতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শশঙ্গা পঞ্চায়েতের আর এক নাবালিকাও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছিল। তাকেও মাঝপথে থামানো হয়। এভাবে আরও দুই নাবালিকার বিয়ে ওই রাতে বন্ধ করেছেন আধিকারিকরা। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত কেতুগ্রাম ব্লকে নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি ছিল। সেখানে লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়। খোদ জেলাশাসক আয়েশা রানি এ নিজে গিয়ে ওই ব্লকে একাধিক কর্মসূচি নেন। তারপর থেকেই এই ব্লকে নাবালিকা বিয়ে কমে গিয়েছে। এখন এই প্রবণতা বেড়েছে খণ্ডঘোষ ব্লকে। সেকারণে এই ব্লকে বিশেষ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাবালিকা বিয়ে দেওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়ির লোকজনের মদত থাকছে। 

    জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে করার পর গর্ভবতী হয়ে গেলে বিপদ বাড়ে। গতবছর মৃত্যুর হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এবার সংখ্যাটা অনেক কমেছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে এই সংখ্যাটা শূন্যে নেমে আসবে। 

    প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আধিকারিকদের পাশাপাশি নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার বিষয়ে জনপ্রতিনিধিরাও উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁরাও গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কম বয়সে বিয়ের ক্ষতিকারক দিকগুলি তুলে ধরছেন। আগে অনেক সময় জনপ্রতিনিধিদের ‘ম্যানেজ’ করে অভিভাবকরা নাবালকদের বিয়ে দিতেন। কিন্তু, এখন বিয়েতে কোনও প্রভাবশালী মদত দিলে তাদেরও ছাড়া হবে না বলে শীর্ষস্তর থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)