ঘাটালে পালিয়ে যাওয়ার পিছনে মহিলারাই বেশি দায়ী, মন্তব্য ওসির
বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটালে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে কিংবা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে মহিলাদেরকেই কাঠগোড়ায় তুলল পুলিস। রাখঢাক না করেই ঘাটাল থানার ওসি শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মহিলারাই বেশি দায়ী। যুবক তথা পুরুষদের তেমন কোনও দোষ থাকে না।’ তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে সরগরম ঘাটাল। জোর চর্চা চলছে নেটপাড়াতেও।
ঘাটাল মহকুমার তিনটি থানা এলাকায় প্রায় রোজদিন তরুণী, যুবতী বা গৃহবধূ বেপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন। নাবালিকারাও প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এইসব ঘটনা সামাল দিতে লেজেগোবরে হতে হচ্ছে পুলিসকে। খুঁজে আনতে হিমশিমও খেতে হচ্ছে তাদের। স্বাভাবিকভাবেই মহকুমার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে খানিক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘাটাল থানার মারিচ্যাতে এক আইনি সচেতনতা শিবিরে নানা বিষয়ের পাশাপাশি এই পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঠাঁই পায়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওসি ওই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরাও তিতিবিরক্ত। তরুণী-যুবতী-গৃহবধূ উদ্ধার করে আনার পর তদন্ত করে দেখেছি, পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের ভূমিকাই থাকে বেশি। কোনও যুবক যদি মহিলাকে পালিয়ে নিয়ে যেতে রাজি না হন, তখন মহিলারাই আত্মহত্যা করার হুমকি সহ নানাভাবে যুবকদের ব্ল্যাকমেল করে থাকেন।’
ঘাটাল মহকুমায় থাকাকালীন বহু ওসি তাঁদের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এমন অনেক ঘটনা রয়েছে এক-একটি মেয়েকে আমি পাঁচবার পর্যন্ত উদ্ধার করে এনেছি। অনেক নাবালিকাকে উদ্ধারের পর হোমে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আবার পালিয়ে গিয়েছে। এমন ঘটনাও বহু রয়েছে। অল্পবয়সী মেয়েদের পালিয়ে যাওয়ার পেছনে থাকে অকাল পরিপক্কতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নাবালিকারা তার মা, কাকিমা বা বউদিদের কাছ থেকেই অকালে পেকে যায়।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বিকেলে মা-কাকিমা-বউদিরা যে গল্পের আড্ডায় বসেন সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একান্ত ব্যক্তিগত এবং এলাকার কোনও যুবকের বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় বাধাহীনভাবেই নাবালিকারা অংশগ্রহণ করে থাকে।’
শঙ্খবাবুর পরামর্শ, বাড়ির বাচ্চা মেয়েদের সঙ্গে বাড়ির সদস্যদের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে হবে। তাদের সময় দিতে হবে। সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা কী করছে তাদের আচরণ সম্পর্কে সদা সতর্ক থাকতে হবে। তবেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে তিনি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা আলাদা করে বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যা, জীবন চক্র নিয়ে খোলামেলা আলোচনা ও ব্যাখ্যা করা দরকার।’