১৫ জন অশিক্ষক কর্মীর নথি অসম্পূর্ণ, ভাতার জন্য নাম পাঠানো গেল না রাজ্যে
বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২০১৬সালে এসএসসির মাধ্যমে নিযুক্ত ১৫জন অশিক্ষক কর্মীর নথি অসম্পূর্ণ। মাসিক ভাতার জন্য তাঁদের কাছ থেকে নথি জোগাড় করা হচ্ছিল। ৬০১জন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীর মধ্যে মোট ৫৮৩জনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য বিকাশ ভবনে পাঠিয়েছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস। ১২জুন, বৃহস্পতিবারই তাঁদের নথিপত্র বিকাশ ভবনে পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং দু’জন ইস্তফা দিয়েছেন। বাকি ১৫জন তথ্য জমা করলেও, তা অসম্পূর্ণ। ওই অশিক্ষক কর্মীরা প্রত্যেকেই কাঁথি ও এগরা মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত। তাঁরা কাঁথির অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) অফিসে নথিপত্র জমা দিয়েছেন। সেসব খতিয়ে দেখা যায়, ওই ১৫জনের জমা করা নথি অসম্পূর্ণ। তাগাদা দেওয়ার পরও সব নথিপত্র মিলছে না। এই অবস্থায় ওই ১৫জনের নাম বাদ দিয়ে ৫৮৩জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) পলাশ রায় বলেন, আমরা মোট ৫৮৩জন অশিক্ষক কর্মীর নাম ও সেই সম্পর্কিত তথ্য বিকাশ ভবনে পাঠিয়েছি। ১৫জনের নথি অসম্পূর্ণ। তাই তাঁদের নামের তালিকা পাঠানো সম্ভব হয়নি।
রামনগর গার্লস হাইস্কুলে ২০১৬সালের প্যানেলে এক গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়মিত মাইনে পেলেও এখনও অ্যাপ্রুভাল হয়নি। গোটাটাই অবাক হওয়ার মতো। তাঁর পাশে দাঁড়াতে তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠন কাঁথির জেলা সভাপতি শ্যামল বাকড়া সহ অন্যান্যরা কাঁথির অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু, অ্যাপ্রুভাল না হওয়ায় তাঁর নথি জমা আটকে গিয়েছে। শ্যামলবাবু বলেন, ওই গ্রুপ-ডি কর্মীর অ্যাপ্রুভাল হয়নি। আমরা এডিআই(মাধ্যমিক) অফিসে গিয়েছিলাম। কীভাবে ওই সমস্যার সমাধান সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
তমলুক ব্লকের খামারচক হাইস্কুলে এসএসসি পরীক্ষা ছাড়াই দু’জন সহ-শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় এখনও জেলবন্দি প্রধান শিক্ষক সহ মোট চারজন। তাঁদের মধ্যে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসের দুই আপার ডিভিশন ক্লার্কও রয়েছেন। ওই স্কুলে এসএসসি ছাড়াই অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। গত তিন মাস ওই স্কুলের একজন গ্রুপ-ডি কর্মী স্কুলে আসছেন না। তাঁর সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা নিয়ে পরামর্শ নিতে মাস তিনেক আগে টিচার ইন-চার্জ তিমির বর্মন এবং সহ-শিক্ষক তরুণ পুরকাইত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে গিয়েছিলেন। যদিও কোনওরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্কুলে না এসেও ওই গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়মিত মাইনে পাচ্ছেন।
২০১৬সালে এসএসসির মাধ্যমে নিযুক্ত অশিক্ষক কর্মীদের প্রত্যেকের চাকরি বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে অনেকের ওএমআর শিট প্রকাশিত হয়েছিল। এই জেলায় স্কুলে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে চাকরি পাওয়া অনেকেই ১০টির কম প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অনেকেই পুরো সাদা খাতা জমা করেছেন। কাঁথি-১ব্লকের একটি হাইস্কুলের একজন বিজ্ঞান শাখার শিক্ষক এবং এক অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। ওই অশিক্ষক কর্মীর ওএমআর শিট ভাইরাল হয়েছিল। কোন জাদুতে চারটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চাকরির নিয়োগপত্র পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। জবাবে চাকরি খোয়ানো ওই অশিক্ষক কর্মী জানান, খেজুরির এক নেতার সুপারিশে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি।