• রামপুরহাটের বহু অঙ্গনওয়াড়িতে অনিয়ম
    বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বারবার সতর্ক করার পরও ঠিকমতো চলছে না রামপুরহাট শহরের কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। খোলা আকাশের নীচে চলছে রান্না। কোথাও শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের হাতে শুকনো খাবার ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীই আসেন না। সহায়িকা রান্নাবান্না করছেন। প্রাথমিকের পাঠদান লাটে উঠেছে। ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে।  শুক্রবার সকালে শহরের বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আচমকা পরিদর্শনে যান তিনি। সেগুলির হাল দেখে প্রকাশ্যেই বিরক্তি প্রকাশ করেন। যার জেরে পাঁচ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে শোকজ করা হয়েছে। মহকুমা শাসক বলেন, অনেক সুযোগ দিয়েছি। এরপরও যদি কর্মীরা নিজেদের শুধরে না নেন, তাহলে বদলি বা পরিবর্তন করতে হবে। 

    রামপুরহাট শহরের ১৮টি ওয়ার্ড মিলিয়ে ৩৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে ১৭টির নিজস্ব বিল্ডিং নেই। সেগুলি খোলা আকাশের নীচে অথবা ক্লাবঘরে চলছিল। পাঠদান লাটে উঠেছিল। ওই স্থানগুলিতে শিশু ও গভবর্তী মায়েদের ডেকে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুধু চাল, ডাল ও ডিম। অথচ নিয়মানুযায়ী রান্না করা পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়ার কথা। গত এপ্রিল মাসে এই সংক্রান্ত গণসাক্ষরিত অভিযোগ জমা পড়ে মহকুমা শাসকের কাছে। অভিযোগকারী মায়া মণ্ডল, চৈতালি কোনাই, সোহম কর্মকার, সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায়রা অভিযোগে জানান, শুধুমাত্র শুকনো চাল, ডাল আর ডিম দেওয়া হচ্ছে। অথচ আলু, সব্জি, তেল, মশলা, জ্বালানির বিল দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। করোনা কাল থেকেই এমনটা চলে আসছে। কোথাও বিল্ডিং হয়ে পড়ে থাকলেও সেন্টার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। খোলা আকাশের নীচে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চলছে রান্না। এদিকে এপ্রিলের শুরুতেই ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা অর্ডার দেওয়া হয়, যে সমস্ত সেন্টারের নিজস্ব বিল্ডিং নেই। তাঁরা ঘর ভাড়া নিতে পারবে। ভাড়া বাবদ অর্থ দেবে সরকার। সেই মতো নির্দিষ্ট মে মাস থেকেই অধিকাংশ কেন্দ্রের কর্মীরা ঘর ভাড়া নিয়ে সেন্টার চালাচ্ছেন। কিন্তু কিছু সেন্টারের কর্মীরা সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নীচেই সেন্টার চালাচ্ছেন। উপভোক্তাদের শুকনো খাবার ধরিয়ে দায় সারছেন। তাঁরা বাড়ির কাছ থেকে কিছুটা দূরবর্তী এলাকায় ভাড়া ঘরে যেতে চাইছেন না। এদিন এসব অনিয়ম দেখে ক্ষুব্ধ হন মহকুমা শাসক। কিছু সেন্টারে সরকারি নির্দেশ তো উপেক্ষা করা হচ্ছেই, এমনকী দিনের পর দিন কর্মী আসছেন না। বারবার বলার পরও ওইসব কর্মীদের হুঁশ ফিরছে না, যা দেখে অবাক হন তিনি। মহকুমা শাসক বলেন, এর আগে দু’ বার ওই কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও দু’-একজন কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকছেন। এছাড়া এপ্রিল মাসে বলা হয়েছিল গাছের তলায় রান্না করা যাবে না। 
  • Link to this news (বর্তমান)