• ছুটি না নিয়ে বেপাত্তা বাঁকুড়া মেডিক্যালের শিশু চিকিৎসক
    বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ছুটি না নিয়েই দু’দিন ধরে বেপাত্তা রয়েছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের এক চিকিৎসক। ফলে পরিষেবা না পেয়ে চরম ক্ষুব্ধ রোগীর আত্মীয়রা। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুর পরিবার বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হয়। সাংসদ বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুকে দিল্লি থেকে ফোন করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। অধ্যক্ষ তড়িঘড়ি অন্যান্য সিনিয়র চিকিৎসকদের ওয়ার্ডে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। যদিও ওই চিকিৎসকের না জানিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও পরিষেবার ঘাটতির অভিযোগ মানতে চাননি অধ্যক্ষ।

    সাংসদ বলেন, দিন তিনেক আগে ১০মাসের ওই শিশুকে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিৎসকের আওতায় শিশুটি ভর্তি হয়েছিল। ভর্তির পর থেকে ওই চিকিৎসকের আর দেখা পাওয়া যায়নি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় শিশুটি বেডে পড়েছিল। অভিযোগ পাওয়া মাত্র আমি ফোন করে অধ্যক্ষকে এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে বলি। তারপর শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগে চিকিৎসকদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরেই কর্তব্যে গাফিলতি করছিলেন। আমার কাছে এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল। শিশু বিভাগের ঘটনায় ওই অভিযোগ কার্যত প্রমাণ হয়ে গেল।

    অধ্যক্ষ বলেন, ওই চিকিৎসক ছুটি না নিয়ে বাইরে কোথাও গিয়েছেন। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে শিশু বিভাগের পরিষেবা সচল ছিল। ইন্টার্ন ও জুনিয়র ডাক্তাররা ওয়ার্ডে সর্বক্ষণ পরিষেবা দিচ্ছেন। তবে সিনিয়র চিকিৎসক থাকলে ভালো হতো। সাংসদ ফোন করার পর ওয়ার্ডে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অন্য এক সিনিয়র চিকিৎসক শিশুটিকে দেখেছেন।

    উল্লেখ্য, কলকাতার বাইরে যেসব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা মেলে, তারমধ্যে বাঁকুড়া অন্যতম। আশপাশের জেলার পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড থেকেও রোগীরা বাঁকুড়ায় চিকিৎসার জন্য আসেন। গত কয়েক বছরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে একাধিক জটিল রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন হয়েছে। এমনকী, ভুবনেশ্বর এইমস থেকে ফিরে আসা এক রোগীকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের চিকিৎসকরা সম্প্রতি সুস্থ করে তুলেছেন। তবে ‘সর্ষের মধ্যে ভূতে’র মতো কয়েকজন সিনিয়র চিকিৎসক পরিষেবার ব্যাপারে উদাসীন রয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁরা কার্যত ‘আসি যাই, মাইনে পাই’ গোছের হয়ে উঠেছেন। হাসপাতালের থেকে তাঁরা চেম্বার ও নার্সিংহোমে বেশি সময় দেন। অনেকে ডিউটি ফাঁকি দিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন বলেও অভিযোগ। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, শিশু বিভাগের ওই চিকিৎসক বাঁকুড়া শহরেই একাধিক জায়গায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। জেলার বাইরেও তিনি রোগী দেখেন বলে শুনেছি। এভাবে ছুটি না নিয়ে বাইরে চলে যাওয়া উচিত হয়নি। ‘ডিউটি আওয়ার্সে’ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ‘স্টেশন লিভ’ করা সার্ভিস রুলের পরিপন্থী। ওই ঘটনার জন্য চিকিৎসকের শাস্তি হতে পারে। 
  • Link to this news (বর্তমান)