মাত্র কয়েকদিনেই দ্বিগুণ হবে টাকা। আর সেই লোভে পা দিয়েই সর্বস্ব খুইয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা সুশোভন মণ্ডল। প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা তিনি তুলে দিয়েছিলেন প্রতারকদের হাতে। পুলিশের সাহায্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত সাড়ে চার লক্ষ টাকা উদ্ধার করতে পেরেছেন তিনি। ‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’ প্রবাদ যেন আর কারও কপালের লিখন না হয় তার জন্য সাধারণ মানুষকে সতর্কও করছেন তিনি।

‘ফির হেরা ফেরি’ সিনেমায় চিট ফান্ডের রমরমা কারবার খুলে বসেছিলেন বিপাশা বসু। তার পর গল্প এগিয়ে চলে…। কিন্তু সিনেমায় সাধারণ মানুষের জন্য যে সতর্কবার্তা ছিল, তা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন দর্শক। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের তরফেও প্রচার চালানো হয়।

কিন্তু সেই সমস্ত সতর্কবার্তা কানে না দিয়ে প্রতারণা চক্রে পা দিয়েছিলেন গোবরডাঙার সুশোভন। পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন পান তিনি। ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেন, ট্রেড ইনভেস্টমেন্টে অর্থ বিনিয়োগ করলে স্বল্পদিনে তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

প্রথম অবস্থায় কিছু টাকা বিনিয়োগ করার পর মুনাফাও পান সুশোভন। পরবর্তীতে প্রায় দফায় দফায় ১২ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

এর পর মুনাফার টাকা-সহ আসল তুলতে চাইলে তাঁকে বলা হয় আরও প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করতে হবে। এর পরেই মুনাফার অর্থ তুলতে পারবেন তিনি। এ কথা শোনার পরে সুশোভন বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণা চক্রে পা দিয়ে ফেলেছেন। পরবর্তীতে ১২ মার্চ তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বারাসত সাইবার থানায়।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, সুশোভন যে সমস্ত অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাঠিয়েছে সেগুলি অন্য রাজ্য থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তদন্তে নেমে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে প্রায় ৪,৫১,৩৬০ টাকা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সুশোভনের হাতে পুনরুদ্ধার করা টাকা তুলে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় কি ভিন রাজ্যের কোনও প্রতারণা চক্র সক্রিয়? তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।