সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: কাটোয়ার আমূল গ্রামে ঘটে গেল এক রোমহর্ষক খুনের ঘটনা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীকে খুন করে রাতভর মৃতদেহের পাশেই সন্তানকে নিয়ে শুয়ে ছিলেন স্ত্রী মিতা দাস। প্রেমিকের সঙ্গে যৌথ পরিকল্পনায় এই নৃশংস খুন সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিস সুপার রাজীব কুমার। মঙ্গলবার কাটোয়া থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন।
পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত মিতা দাস তার প্রেমিক অভিজিৎ বাগদির সঙ্গে বসে স্বামী মহাদেব দাসকে খুন করার ছক কষেন। অভিজিৎ বাইরে থেকে অ্যাসিড কিনে মিতাকে দেয়। রবিবার রাতে সেই অ্যাসিড মদের সঙ্গে মিশিয়ে স্বামীকে খাওয়ান মিতা। কিছুক্ষণের মধ্যেই মহাদেব অচৈতন্য হয়ে পড়েন। এরপর বাঁশ দিয়ে তার মাথার পিছনে আঘাত করা হয় এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
খুনের পরেও মিতা কোনও উত্তেজনার লক্ষণ দেখাননি। বরং, সন্তানের সঙ্গে মৃত স্বামীর পাশেই রাত কাটিয়ে সকালে কান্নাকাটি শুরু করেন এবং প্রতিবেশীদের জানান যে তাঁর স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কাটোয়া থানার পুলিস মিতাকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সমস্ত খুঁটিনাটি জানতে পারে। এরপর মিতাকে নিয়ে গিয়ে তার বাড়ি থেকে খুনে ব্যবহৃত বাঁশ, অ্যাসিডের বোতল, বালিশ এবং মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।
মিতার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিস প্রেমিক অভিজিৎ বাগদিকে বীরভূম জেলার নানুরের চণ্ডীদাসপাড়া থেকে গ্রেফতার করে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “আমূল গ্রামের মতো শান্তিপূর্ণ জায়গায় এমন ঘটনা সত্যিই ভয়ংকর। বিশ্বাসই হচ্ছে না এমন কিছু ঘটতে পারে।” পুরো গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে আতঙ্ক ও ক্ষোভের ছায়া।