• প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল সুতপা চৌধুরীকে, বহু চর্চিত সেই মামলার নিম্ন আদালতের রায় পাল্টে গেল হাইকোর্টে
    আজকাল | ১২ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে বহু চর্চিত সুতপা চৌধুরী হত্যাকান্ড মামলায় বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই খুনে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সুশান্ত চৌধুরীর ফাঁসির সাজা বদল করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ শোনালো। 

    রায়ে খুশি নয় সুতপার পরিবার। রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় চ্যালেঞ্জ করে যেন সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।

     ২০২২ সালের ২ মে সন্ধে ৬.৩০ নাগাদ গোরাবাজার এলাকায় নিজের মেসে পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন সুতপা। মালদা জেলার বাসিন্দা  সুতপাকে তাঁরই পূর্ব পরিচিত সুশান্ত চৌধুরী নামে এক যুবক বেশ কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত 'বিরক্ত' করে চলছিল বলে সুতপার পরিবার তাঁকে বহরমপুরের একটি কলেজে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। 

    সুতপার বহরমপুরে থাকার খবর পেয়ে এবং প্রেমে 'প্রত্যাখ্যাত' হওয়ার বদলা নেওয়ার জন্য সুশান্ত গোরাবাজার এলাকায় একটি মেস বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাঁকে গোপনে অনুসরণ করতে থাকে। এরপর সুতপাকে খুন করার জন্য সে একটি ছুরি এবং একটি খেলনা পিস্তলও কেনে। 

    ২ মে  সুতপা যখন একা নিজের মেসে ফিরছিলেন সেই সময় অন্ধকার গলির মুখে দাঁড়িয়ে সুশান্ত হঠাৎই সুতপাকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ওই কলেজ ছাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে সুশান্ত তাঁদেরকে খেলনা পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। যদিও  খুনের  কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশের সহযোগিতায় বহরমপুর থানার পুলিশ সুশান্তকে গ্রেপ্তার করে। 

    ২০২৩ সালের ৩১ অগাস্ট বহরমপুরের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক সুশান্তকে ফাঁসির সাজা শোনান। 

    এরপর সুশান্তর তরফে নিম্ন আদালতের এই রায় চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে  আবেদন করা হয়েছিল। 

    বুধবার সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী বলেন,' আমার মেয়ে খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারক দেবাংশু বসাক এবং শব্বর রশিদী-র ডিভিশন বেঞ্চে মামলা হয়েছিল। আজ ডিভিশন বেঞ্চ ফাঁসির সাজা রদ করে আমার মেয়ের খুনি সুশান্ত চৌধুরীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছে।' আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে , এই অপরাধের সময় সুশান্তের বয়স মাত্র ২১ ছিল। সেটি মাথায় রেখে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ৪০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।  

     স্বাধীনবাবু বলেন,' নিম্ন আদালতের রায়ে আমার পরিবার খুশি হয়েছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতের এই রায় আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন রাখছি এই রায় চ্যালেঞ্জ করে যেন সুপ্রিম কোর্টে  আবেদন করা হয়।'

     
  • Link to this news (আজকাল)