• বর্ষার আগেই ভেঙে চৌচির হাওড়ার একাধিক রাস্তা
    এই সময় | ১২ জুন ২০২৫
  • সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, হাওড়া

    আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ মাসের ১৮ তারিখ নাগাদ দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করতে পারে বর্ষা। বর্ষার আগে হাওড়া শহরের বেশিরভাগ ভাঙা রাস্তা মেরামতি করা হয়েছে বলে হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, হাওড়া শহরের অনেক রাস্তা এখনও ভাঙাচোরা।

    বর্ষা পুরোদমে চলতে থাকলে কী অবস্থা হবে, তা নিয়ে ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না হাওড়া শহরের বাসিন্দারা।

    শহরের অনেক রাস্তাই ভেঙে চৌচির হয়ে গিয়েছে। উত্তর হাওড়ার বামুনগাছি রেলওয়ে ইনস্টিটিউট মাঠ থেকে লিলুয়া থানার দিকে যেতে প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। পিচ উঠে গিয়েছে। খুবই খারাপ অবস্থা।

    গত সপ্তাহের বৃষ্টির পরে এই রাস্তায় যান চলাচল রীতিমতো আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাড়ি উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন রয়েছে, আবার ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। পাশে সেন্ট্রাল স্কুলের সামনেও রাস্তা খারাপ। সেই রাস্তাটি অবশ্য রেলের পক্ষ থেকে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।

    একই ভাবে, বেনারস রোডের বেশ কিছুটা অংশ এখনও ভাঙাচোরা। অন্য দিকে, ঘুসুড়ির নস্কর পাড়া রোড তো রীতিমতো ভয়াল আকার ধারণ করেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। পিচ্ছিল রাস্তায় দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই। এই রাস্তাটিও দু’দিন আগে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে৷

    বাকি শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ— অনেক গলি রাস্তা এখনও খারাপ। যদিও হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই রাস্তাগুলি দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।

    হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বর্ষার আগে থেকেই হাওড়া পুর এলাকায় রাস্তা মেরামতিতে জোর দেওয়া হয়েছে। পুরসভা এলাকায় ৪১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা খরচ করে ২৬২টি রাস্তা ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে।

    এর মধ্যে পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস রোড–সহ কয়েকটি রাস্তায় কংক্রিটের ঢালাই করা হয়েছে, কারণ, জমা জলে পিচের রাস্তা বার বার ভেঙে যাচ্ছিল।

    এর পাশাপাশি এখনও কিছু রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। প্রায় ৭ কোটি টাকা খরচ করে নেতাজি সুভাষ রোড, মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোডে মেরামতির কাজ চলছে। সুজয় জানান, গত ১০ মাসে ২৬২টি রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করা হয়েছে।

    আরও বেশ কিছু নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে। নতুন যে সব রাস্তা তৈরি হবে, তার জন্য ২২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে, যাতে ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা হবে। এর মধ্যে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লা পাড়ার একটি বড় রাস্তা করা হবে। বাকি রাস্তাগুলির কাজ শেষ হতে পুজো পেরিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    সুজয় বলেন, ‘হাওড়া পুরসভার ৪৫-৫০ নম্বর পর্যন্ত সংযোজিত এলাকার ১০৭টি ছোট–বড় রাস্তার কাজ হয়েছে ২২ কোটি টাকায়।

    ওই এলাকায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মূলত শীতকালে রাস্তা তৈরি হয়। এ বারে বর্ষার কথা ভেবে আগে থেকেই এই রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে বর্ষায় এবং পুজোতে সমস্যা না হয়।’

    সুজয় জানান, উত্তর হাওড়ায় পাইপলাইনের কাজ হচ্ছে বলে রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। সালকিয়ায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হচ্ছে৷ এটা হয়ে গেলে উত্তর হাওড়া ও বালি এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। রাস্তা খোঁড়ার জন্য মানুষের সমস্যা হচ্ছে। তাই বর্ষার জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে এই ভেবে, মানুষের যাতায়াতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়।

  • Link to this news (এই সময়)