• থমথমে মহেশতলায় জারি ১৬৩ ধারা, শুরু তৃণমূল-বিজেপি তরজা
    প্রতিদিন | ১২ জুন ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: প্রাথমিক উত্তেজনা সামাল দেওয়া গেলেও এখনও থমথমে মহেশতলা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে সেখানে। এদিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। এদিকে, উন্মত্ত জনতার ইটের ঘায়ে রক্তাক্ত কমপক্ষে ১০-১২ জন পুলিশকর্মী। ডিসি পোর্টের কপালে ৩টি সেলাই পড়েছে।

    এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টায় বিজেপি। এদিন দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভবানীভবনের সামনে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভবানীভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “পুলিশ ফেল। আগামিকাল প্রশ্নোত্তর পর্বের পর বিধানসভা চলতে দেওয়া হবে না।” বৃহস্পতিবার দলীয় বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনেও যেতে পারেন তিনি। ওইদিনই আবার থমথমে মহেশতলায় যেতে পারেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

    যদিও গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এদিন মহেশতলার অশান্তি প্রসঙ্গে পুর ও নগরোয়ন্ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাংলা কখনই গুজরাট হবে না। এখানে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ছিলাম, আছি, থাকব। পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। আমাদের বাংলায় হিংসার কোনও জায়গা নেই। দুষ্কৃতীরা শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে আইন কঠোরভাবে তার প্রতিরোধ করবে। কড়া শাস্তি হবে।”

    উর্দিধারীদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদ করে ফিরহাদ আরও বলেন, “পুলিশের উপর আক্রমণ হলে আইনে যে প্রভিশন আছে, সেই অনুযায়ী শাস্তি হবে। কাউকে ছাড়া যাবে না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।” এরপর গেরুয়া শিবিরকে বিঁধে তিনি আরও বলেন, “বিজেপি কী বলল সেটা দিয়ে কিছু যায় আসে না। কারণ, এরা নিজেরা সন্ত্রাসবাদী। এরা নিজেরা অশান্তি করে। এরা উসকানি দিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে। আমাদের বাংলা সংহতি, সম্প্রীতির সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। এবং তা চালিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

    প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে আক্রা সন্তোষপুর এলাকায় ফলের দোকান বসানো নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। প্রথমে বচসা। পরে তা হাতাহাতির রূপ নেয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এলাকায় শুরু হয় ব্যাপক ভাঙচুর। একাধিক বাড়ির ছাদের উপর থেকে ঢিল ছোঁড়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ-সহ পুলিশের শীর্ষকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। উন্মত্ত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। শুরু হয় পাথরবৃষ্টি। রবীন্দ্রনগর থানা লাগোয়া এলাকায় একটি বাইকেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় ব়্যাফ। কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়া হয়। মৃদু লাঠিচার্জও করা হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)