বহরমপুরের সুতপা হত্যা মামলায় নজিরবিহীন রায় হাই কোর্টের
প্রতিদিন | ১২ জুন ২০২৫
গোবিন্দ রায়: বহরমপুরে কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরী খুনে নজিরবিহীন রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। দোষী সুশান্ত চৌধুরীর ফাঁসি রদ করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪০ বছরের আগে সাজা মাফ চেয়ে আবেদন করা যাবে না। অর্থাৎ ২০৬২ সালের মে মাসের আগে সাজা কমানোর কোনও আবেদন করা যাবে না। এছাড়া দোষীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
গত ২০২২-এর ২ মে বহরমপুরে একটি মেস বাড়ির সামনে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে মেরে খুন করে তাঁর প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। ৪২ বার ছুরি দিয়ে কোপানো হয় সুতপাকে। আশপাশে উপস্থিত লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্য অনলাইন বিপণন সংস্থা থেকে খেলনা বন্দুক অর্ডার করে সুশান্ত। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। মিথ্যে বয়ান দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের দাবি, সুতপার শরীরে যেভাবে ছুরি দিয়ে সে উপুর্যপরি আঘাত করেছিল, তাতেই স্পষ্ট, প্রেমিকার প্রতি কতটা প্রতিশোধপরায়ণ ছিল সুশান্ত। একাধিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে গত ২০২৩ সালের আগস্টে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে বহরমপুর আদালত। সুতপার পরিবারের দাবি, শুধু মেয়েকে খুন করাই নয়, একাধিক অপরাধ করে সুশান্ত। উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই সুতপার উপর মানসিক অত্যাচার করা হত। বহরমপুর আদালতের রায়ে খুশি হন সুতপার পরিবারের লোকজন।
ফাঁসির সাজা ঘোষণার পরেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সুশান্ত। সাজা কমানোর আর্জিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় দোষী সুশান্ত। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। বুধবার বিচারপতি ফাঁসির সাজা রদ করে নজিরবিহীন রায় দেন। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪০ বছরের আগে সাজা মাফ চেয়ে আবেদন করা যাবে না। অর্থাৎ ২০৬২ সালের মে মাসের আগে সাজা কমানোর কোনও আবেদন করা যাবে না। দোষীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।