একের পর এক শিক্ষকের বদলি পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ
বর্তমান | ১২ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, বসিরহাট: যত দিন যাচ্ছে, স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কমছে। ফলে প্রশ্নের মুখ পড়াশোনা। উচ্চমানের পড়াশোনার দাবিতে তাই স্কুলের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের। এই ঘটনাটি ঘটেছে সীমান্তবর্তী স্বরূপনগরের বালতি নিত্যানন্দকাটি পঞ্চায়েতের নবাতকাটি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে। বিক্ষোভকারীরা অভিভাবকরা জানান, এই স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩০০ জন। এক সময়ে পাচজন শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু একের পর এক বদলির ধাক্কায় এখন দু’জন মাত্র শিক্ষক এবং একজন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। এই অবস্থায় ছ’টি ক্লাসের ৩০০ জন ছাত্রছাত্রীকে পড়ানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এক কথায় বলা যেতে পারে, পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল এগারোটা থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, গ্রামবাসী এবং ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই স্কুলের শিক্ষকদের বদলি বন্ধ করতে হবে এবং নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। এক ছাত্রী সাদিয়া সুলতানা বলে, একের পর এক শিক্ষক চলে যাচ্ছেন অন্য জায়গায়। এভাবে যদি শিক্ষক চলে যায় তাহলে আমরা কীভাবে পড়াশোনা করবো? তাই আজ স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।
পড়ুয়াদের অভিভাবকরা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অনেক বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি, ভালো স্কুলে ছেলেমেয়েকে পড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই আমরা সরকারের উপরে ভরসা করি। কিন্তু দিনের পর দিন স্কুল থেকে শিক্ষকরা যেভাবে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যাচ্ছেন, তাতে পড়াশোনাই হচ্ছে না স্কুলে। যে দু’জন শিক্ষক ও একজন পার্শ্বশিক্ষক আছেন, তাদের পক্ষে এত পড়ুয়াকে পড়ানো এক কথায় অসম্ভব। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এই স্কুল থেকে শিক্ষক বদলি বন্ধ হোক এবং নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। যাতে স্কুলে পড়াশোনা আবার ভালো করে করানো সম্ভব হয়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঞ্চানন সরকার বলেন, স্বরূপনগর নর্থ সার্কেলের ভিতরে এই স্কুলটাই এক নম্বরে রয়েছে। প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে বলতে চাই, ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে কোনও শিক্ষককে বদলি করা হলে, সঙ্গে সঙ্গেই এখানে অন্য একজন শিক্ষককে দেওয়া হোক। কিন্তু ইতিমধ্যে আরও একজন শিক্ষিকা বদলি নিয়েছেন অন্য জায়গায়। এর ফলে সঙ্কটে পড়াশোনা। আমি দু’জন, তিনজন শিক্ষক নিয়ে ৩০০ জন ছাত্রছাত্রীকে কীভাবে পড়াশোনা করাব? আমি চাই, দ্রুত এই স্কুলে শিক্ষক দেওয়া হোক। নিজস্ব চিত্র