তিনবছরে অন্তত একবার! দুর্ঘটনা এড়াতে রাজ্যের সমস্ত ব্রিজ-কালভার্ট অডিটের নির্দেশ
প্রতিদিন | ১১ জুন ২০২৫
নব্যেন্দু হাজরা: দুর্ঘটনা এড়াতে রাজ্যের সমস্ত সেতু এবং কালভার্টের অডিট করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের রোড সেফটি কমিটি। সম্প্রতি এবিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তিনবছরে অন্তত একবার রাজ্যের মধ্যে থাকা সমস্ত সেতু এবং কালভার্টের অডিট করতে হবে। রাজ্য সরকার এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অধীনস্থ সমস্ত সেতু এবং কালভার্টই এর আওতায় পড়বে। পাশাপাশি প্রত্যেক সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে বার্ষিক পরিকল্পনার কথা লিখিতভাবে জাতীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রককে জানাতে হবে রাজ্যকে। ব্রিজের ক্ষেত্রে আইআরসি স্ট্যান্ডার্ড মেনে তার সুরক্ষাবিধি দেখতে বলা হয়েছে।
নবান্নসূত্রে খবর, রাজ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে ২ হাজার ২০০-র বেশি সেতু রয়েছে। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্তদপ্তরের। প্রতিবছরই বর্ষা শুরুর আগেই এই সেতুগুলোর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। এবারও তা হয়েছে। তবে দেশের শীর্ষ আদালতের এই রোড সেফটি কমিটি দুর্ঘটনা রোধে আরও সতর্ক হতে চাইছে। তাই এই অডিটের নির্দেশ বলে মনে করা হচ্ছে।
পূর্তদপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, অডিট করার সময়, সাধারণত সেতু ও কালভার্টের প্রতিটি অংশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। কোনো ক্ষয়, ফাটল বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা, তা দেখে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়। কিছু ত্রুটি শুধু চোখে দেখা যায় না, তাদের জন্য শব্দ এবং স্পর্শের ব্যবহার করেন আধিকারিকরা। উদাহরণস্বরূপ, কোনও অংশে যদি ফাটল থাকে, তাহলে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে শব্দ ভিন্ন হবে। অডিটের সময়, প্রতিটি অংশের অবস্থা, কোনও সমস্যা দেখা গেলে তার বিবরণ, এবং প্রয়োজনীয় ছবি বা তথ্য সংগ্রহ করে অডিটের শেষে, একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। যেখানে প্রতিটি অংশের অবস্থা, সমস্যা, এবং প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলি উল্লেখ করা থাকবে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতু। তারপরেই সেতু পরীক্ষা নিয়ে নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। হয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা। সূত্রের খবর, বর্তমানে গোটা রাজ্যে পূর্তদপ্তরের অধীনে ২২০০-রও বেশি সেতু রয়েছে। এছাড়া রয়েছে কালভার্ট। মূলত সেতুগুলি কী অবস্থায় রয়েছে? তা জানতে বর্ষা শুরুর আগেই এগুলো পরিদর্শনের নির্দেশ দেয় পূর্তদপ্তর। মুখ্যসচিবকে এই চিঠি সুপ্রিম কোর্টের রোড সেফটি কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় মিত্তালের তরফে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার বার্ষিক পরিকল্পনা জাতীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রককে জানাতেও বলা হয়েছে। কোন সেতুর কি হাল, কী কী সারানো হবে, কিছু বদলানো হবে কিনা এই যাবতীয় বিষয়গুলো সেখানে উল্লেখ করার নির্দেশ সেখানে রয়েছে।