• সীমান্তের ওপারে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ, জেলাশাসকের দ্বারস্থ চাষিরা
    বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: চাষাবাদ করতে সুবিধামতো সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে যেতে পারছেন না কৃষকরা। সপ্তাহে মাত্র তিনদিন যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি। এমনকী কাঁটাতারের ওপারে গোরু ও লাঙল নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নিতে গেলেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে চাষিদের। অযথা হয়রানির অভিযোগ করে বালুরঘাটের চিঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দারা এবার জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন। বিহিত চেয়ে তাঁরা মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতেও একই অভিযোগ উঠে এসেছে। 

    সম্প্রতি সীমান্তে বিএসএফের নতুন ব্যাটালিয়ন এসেছে। এছাড়াও বাংলাদেশে অস্থিরতার পর থেকে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে যাতায়াতে। তবে এই সমস্যা নিয়ে কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে কথা বলেছেন। তারপরেও হয়রান হওয়ায় ক্ষুব্ধ চাষিরা। চাষের সময় অবিলম্বে তাঁরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

    যদিও বিএসএফের কোনও আধিকারিক এনিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে কাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ওপারে যাওয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    চিঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান রঞ্জন কুমার মাহাতোর কথায়,  গ্রামবাসীরা সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে জানিয়েছি। তাঁর সাহায্যে দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি। 

    তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি সুভাষ চাকীর মন্তব্য,এই জেলাতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রয়েছেন। তাঁর আশ্বাসেও সীমান্ত এলাকার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তিনি কী কাজ করছেন জানি না, তবে আমরাও জেলা প্রশাসনকে জানাব। চাষিদের অসুবিধা অবিলম্বে মেটাতে হবে।

    বালুরঘাট ব্লকের দুর্গাপুর, সানাপাড়া, পিরিজপুর এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে লাঙল নিয়ে গিয়ে তাঁরা  নিজেদের জমিতে চাষ করতে পারছেন না। গোরু নিয়ে সপ্তাহে মাত্র তিনদিন কাঁটাতারের ওপারে যেতে দেওয়া হচ্ছে। গোরু ও লাঙল নিয়ে চাষের অনুমতি পেতে দীর্ঘ সময়ও লাগছে। তাছাড়া সময়মতো গেটও খুলছে না বিএসএফ। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কিংবা পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্র নিয়ে গেলেও মিলছে না অনুমতি। এত বাধার মুখে সময়ে চাষ শেষ করা নিয়ে সন্দিহান চাষিরা।

    এবিষয়ে চাষি নবকান্ত বর্মন, নীরেন বর্মন, অজিত মাহাতোরা বলেন, চাষের সময় সপ্তাহে তিনদিন যথেষ্ট নয়। ফসল রোপণ সহ অন্যান্য কাজ করতে রোজই যেতে হয় জমিতে। আমরা অনুমতি নিতে গেলেও বিএসএফ ক্যাম্পে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এলাকার চাষিরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছি।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)