গরমে নাস্তানাবুদ উত্তরবঙ্গবাসী, জেলায় জেলায় অসুস্থ একাধিক পড়ুয়া
বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: গরমে কার্যত ‘পুড়ছে’ উত্তরবঙ্গ। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার সর্বত্র তীব্র দাবদাহ ছিল। যারজেরে স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। শিলিগুড়িতে প্রাথমিকের ক্লাস সকালে করার আবেদন রাজ্যের কাছে জানিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। শুধু তাই নয়, বেঙ্গল সাফারি পার্কে প্রাণীদের জন্য ছাউনি, ওআরএস, বরফ, কুলার, পাখা, ঝর্না প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই অবস্থায় আজ, বুধবার থেকে আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর।
শিলিগুড়িতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই ছিল রোদের তেজ। আশেপাশের জেলাগুলিতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের দাপট আরও বেড়েছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা আমজনতার। রাস্তাঘাটও থাকছে কার্যত শুনশান। এই অবস্থায় প্রাথমিক স্কুলের সময়সূচি বদলের আবেদন রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হয়েছে। শিলিগুড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায় বলেন, মহকুমায় ৩৯০টি প্রাথমিক স্কুল আছে। যারমধ্যে ৩৮০টি স্কুলের ক্লাস দুপুরে হয়। অসহ্য গরমের জন্য সেগুলির ক্লাস সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করার আবেদন রাজ্যের কাছে জানানো হয়েছে।
টানা কয়েক দিন ধরে এমন আবহাওয়া শীলতকুচি থেকে ধূপগুড়ি, ফালাকাটা থেকে বাগডোগরায়। প্রখর রোদে ঘোরাঘুরি করলে সানস্ট্রোকের আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা করেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সানস্ট্রোক এড়াতে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাপমাত্রা এবং চড়া রোদে ঘোরাঘুরি করলে সানস্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। এই পরিস্থিতিতে এমন রোগী এলে তাঁদের দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করে রেখেছি। ঠান্ডা জল, বরফ দিয়েই সানস্ট্রোকে আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়। শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমিয়ে আনতে হয়।
অন্যদিকে, গ্রীষ্মের অতিরিক্ত তাপের হাত থেকে প্রাণীদের রক্ষা করতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই সাফারি পার্কের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, ভালুক, বাঁদর, হরিণ, ময়ূর প্রভৃতির জন্য বিশেষ ছাউনি, স্পিংলার, প্রাণীদের ঘরে জল, বরফ, ফ্যান, কুলার প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানীয় জল, ওআরএস, তরমুজ, শসা, আঙুর প্রভৃতি ফল খাওয়ানো হচ্ছে।
গরমের দাপট তিস্তা পাড়ের জলপাইগুড়ি, তোর্সা পাড়ের কোচবিহার এবং জঙ্গল বেষ্টিত আলিপুরদুয়ারেও অব্যাহত। গরমের জেরে দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ ও ধূপগুড়িতে বেশকিছু স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে একাধিক পড়ুয়া। নদীর জল নামার পর প্রচণ্ড গরমের জেরে মেখলিগঞ্জে কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে জ্বর ও পেটের রোগ দেখা দিয়েছে।