• বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল: দুপুর ১২টাতেও শিশু বিভাগে দেখা নেই চিকিৎসকের, বিক্ষোভ
    বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: সরকারি হাসপাতালে আউটডোর শুরু হওয়ার সময় সকাল ৯টা থেকে। অনেক সময় সাড়ে ৯টাতেও আউটডোর শুরু হয়। অথচ মঙ্গলবার বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের আউটডোরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসকই ছিলেন না। 

    সকাল ৯টা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তীব্র গরমে শিশু কোলে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবকরা। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। এরপরেই তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে তাঁরা তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

    ফালাকাটা ব্লকের বেলতলি গ্রামের আব্দুল আলি বলেন, আমার শিশুর জ্বর ও পেট খারাপ হয়েছে। চিকিৎসককে দেখাব বলে এদিন সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্তও চিকিৎসক ছিল না। বীরপাড়া বাজারের অমরজিৎ জিন্দাল বলেন, আমার ভাইঝিকে কুকুড়ে কামড়েছিল। চিকিৎসককে দেখাব বলে আউটডোরের লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। 

    অভিযোগ উঠেছে, আউটডোর বিভাগ শুরু হওয়ার সময় যেখানে সকাল ৯টায়, সেখানে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে প্রায় দিনই চিকিৎসকরা দেরিতে আসছেন। এদিন আউটডোরের রোগীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসক কখন আসবে জিজ্ঞেস করলেও হাসপাতালের তরফ থেকে উত্তর মেলে না। বেলতলির আব্দুল আলি বলেন, চিকিৎসক কখন আসবে বার বার জিজ্ঞেস করার পরেও এদিন হাসপাতালের কেউ কোনও উত্তর দিতে পারেননি। 

    যদিও বীরপাড়া স্টেট জেলারেল হাসপাতালের সুপার ডাঃ কৌশিক গড়াই হাসপাতালের আউটডোরে দেরিতে চিকিৎসকদের বসার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেন, চিকিৎসকরা সকালে সময় মতোই আউটডোরে বসেন। তবে এদিন শিশু বিভাগে যে চিকিৎসকের বসার কথা ছিল, শরীর খারাপ থাকায় তিনি বসতে পারেননি। বেলা ১২টার পর শিশু বিভাগে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল মাদারিহাট ও কালচিনি ব্লকের চা বলয়ের শ্রমিকরা। ফালাকাটা ব্লকের একটা অংশের মানুষও চিকিৎসা নিতে আসে এই হাসপাতালে। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় এখানে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছে। অসহায় চা শ্রমিকদের চিকিৎসা পরিষেবার কথা চিন্তা করে বীরপাড়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকা উচিত। 

    যদিও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান আদিবাসী উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক বলেন, রাজ্য সরকার তো সেই চেষ্টাই করছে।  জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, জেলায় চিকিৎসক কম। মঙ্গলবার বীরপাড়া হাসপাতালের আউটডোরের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। 

     নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)