• স্বামীকে বাঁচাতেই এলোপাথাড়ি কোপ, ব্রহ্মপুরে যুবক খুনে মহিলা ধৃত অসমে
    বর্তমান | ১১ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ির ব্রহ্মপুরে খুনকাণ্ডে অসমে গ্রেপ্তার হল এক মহিলা। স্বামীর বন্ধুকে খুন করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। যদিও মহিলার স্বামী এখনও ফেরার। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত মহিলার নাম সঙ্গীতা গগৈ রায়। তার স্বামীর নাম পরিমল রায়। পরিমলের খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। 

    প্রসঙ্গত, ৪ জুন পরিমলের বাড়ির পিছনে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয়েছিল তার বন্ধু গৌতম রায়ের (৩০) দেহ। গৌতমের বাবা ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর পুলিস তদন্তে নামে। যেহেতু গৌতম রায় ও পরিমল রায় অসমে কাজ করত এবং পরিমলের শ্বশুরবাড়ি অসমে সেই কারণে পরিমলের খোঁজে ময়নাগুড়ি থানার একটি টিম অসমে যায়। স্থানীয় থানার সহযোগিতায় সঙ্গীতাকে গ্রেপ্তার করে অসম থেকে ময়নাগুড়িতে পুলিস ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসে। 

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, পরিমল ও গৌতম ১ জুন অসম থেকে ময়নাগুড়ির বাড়িতে আসে। ৩ তারিখ রাতে পরিমলের বাড়িতে গৌতম এলে তাদের দু’জনের মধ্যে কোনও কারণে বচসা শুরু হয়। এরপর দু’জন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। স্বামীকে গৌতমের হাত থেকে বাঁচাতে পরিমলের স্ত্রী সঙ্গীতা লাঠি দিয়ে গৌতমের মাথায় আঘাত করে। পরে পরিমলের বাড়িতে থাকা ধারালো অস্ত্র হাতে তুলে নেন গৌতম। সেটি কেড়ে নেয় সঙ্গীতা। গৌতমকে সেই অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারে সঙ্গীতা। এতে গৌতম মারা যান, জিজ্ঞাসাবাদে সঙ্গীতা পুলিসকে এ কথা জানিয়েছে। প্রতিবেশীরা যাতে টের না পান তারজন্য দম্পতি মাটি খুঁড়ে গৌতমের দেহ পুঁতে দেয়। গৌতম বাইক চালিয়ে পরিমলের বাড়িতে এসেছিলেন। পরে দম্পতি বাইকটি তাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে রেখে আসে। পরবর্তীতে বাইকের চাবি, ধারালো অস্ত্র, রেইনকোট চা বাগানের মাটিতে পুঁতে রাখে তারা। 

    ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, একটি বাইক উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে নেমে পরিমল রায়ের বাড়ির পিছনে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখা দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি ছিল গৌতম রায়ের। বাইকটিও ছিল তাঁর। ৩ জুন রাতে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। খুনের পরেরদিন ভোরেই পরিমল ও তার স্ত্রী চ্যাংরাবান্ধা চলে যায়। সেখান থেকে গাড়ি ধরে কোচবিহারে যায়। এরপর ট্রেনে চেপে চলে যায় অসম। মৃত গৌতমের বাবা ৪ জুন ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরিমল রায়ের বড়ি থেকে দেহটি উদ্ধার হওয়ায় এবং তারা গা ঢাকা দেওয়ায় সন্দেহ গাঢ় হয়। পরিমল যেহেতু অসমে কাজ করে এবং তার শ্বশুরবাড়ি অসমেই তাই আমরা তদন্তে ওই রাজ্যের পুলিসের সহায়তা চাই। আমাদের টিম গিয়ে অসম থেকে সঙ্গীতা গগৈ রায়কে গ্রেপ্তার করে আনে। যদিও পরিমল রায় এখনও ফেরার। তার খোঁজ চলছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)