ছাত্রীদের থানায় নির্যাতন: তদন্ত করতে পারে না সিট, হাই কোর্টে বলল রাজ্য, তলব এফআইআর
আনন্দবাজার | ১০ জুন ২০২৫
মেদিনীপুর কলেজের দুই ছাত্রী সুশ্রিতা সোরেন এবং সুচরিতা দাসের উপর নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত করছে সিট। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশেই এই তদন্ত করছে তারা। এই ঘটনায় সিটের তদন্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে রাজ্য। সেখানে মঙ্গলবার রাজ্যের বক্তব্য, এই ধরনের অভিযোগের তদন্ত সিট করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় কার্যকর হওয়া উচিত নয়। মঙ্গলবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে এফআইআর কপি চায়। রাজ্য তা দেখাতে পারেনি। আদালত জানায়, আগামী ১৭ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন রাজ্যকে এফআইআর কপি নিয়ে আদালতে আসতে হবে।
মেদিনীপুর কলেজের দুই ছাত্র-নেত্রীকে থানায় নিয়ে গিয়ে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার অনুসন্ধানে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আইপিএস অফিসার মুরলীধরের নেতৃত্বে সিট গঠনের নির্দেশ দেন। প্রাথমিক ভাবে সিট জানায়, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের কিছু তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে এসেছে। পরে আদালত সিটকে তদন্তভার দেয়। বিচারপতি ঘোষের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলপন্থী শিক্ষকদের সংগঠনের সম্মেলন ঘিরে হইচই হয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির নীচে এক ছাত্র চাপা পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে। তার প্রতিবাদে এসএফআই রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। অভিযোগ, এই ধর্মঘটের সমর্থনে মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছোতেই কয়েক জন প্রাক্তন পড়ুয়াকে জোরজবরদস্তি থানায় তুলে নিয়ে যায় মেদিনীপুর মহিলা থানার পুলিশ। ওই পড়ুয়ারা এসইউসিআই-এর ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র সদস্য। অভিযোগ, থানার তৎকালীন ওসি সাথী বারিক ওই পড়ুয়াদের নির্যাতন করে হুমকি দেন।
এই বিষয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়া। সেই আবেদন শুনে বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ ছিল যে, আগে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেওয়া হোক। সেই দায়িত্ব তিনি দিয়েছিলেন আইপিএস অফিসার মুরলীধরকে। রিপোর্টের ভিত্তিতে এফআইআইরের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে জানায় উচ্চ আদালত। রিপোর্ট পাওয়ার পরে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ছাত্রীর উপর নির্যাতন হয়েছে। তার পরেই সিট গঠনের নির্দেশ দেন বিচারপতি ঘোষ। একক বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে যায়।