• OBC: ‘নিয়োগ-ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে সরকার…’, ওবিসি নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি মমতার
    এই সময় | ১০ জুন ২০২৫
  • বিধানসভায় ওবিসি নিয়ে সরকারের অবস্থান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। ওবিসি তালিকা নিয়ে বিশদ বিবৃতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার বিধানসভায় এ নিয়ে বিবৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এখন সব নিয়োগ প্রক্রিয়া, ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে সরকার। এত দিন এটা বন্ধ ছিল।’ একই সঙ্গে তিনি জানান, ১৪০টি শ্রেণি সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। ৫০টি শ্রেণির সমীক্ষার কাজ চলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তা শেষ করতে হবে। এ দিকে মমতার ওবিসি সংক্রান্ত বিবৃতির পরই অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা।

    এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, সিপিএমের আমলে কোনও সমীক্ষা হয়নি। এ বার যথাযথ পদ্ধতি মেনে সমীক্ষা হয়েছে, কমিশন ইন্টারভিউ নিয়েছে। ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া বন্ধ ছিল, তা আবার আবেদনকারীরা পাবেন।

    এ দিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতির পরেই অধিবেশন কক্ষে শুভেন্দু অধিকারী কিছু বলতে চেয়ে হাত তোলেন। তবে স্পিকার সে সময়ে অধিবেশন-বিরতি ঘোষণা করেন। এর পরেই অধিবেশন কক্ষে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে শুরু করেন। শুভেন্দু চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।’

    পরে বেরিয়ে এসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ‘সংখ্যালঘু তোষণে ব্যস্ত সরকার। হাইকোর্টে কেস পেন্ডিং, সুপ্রিম কোর্টে ১৫ জুলাই ডেট আছে। তার পরেও আজ আগে থেকে নোটিস না দিয়ে, বিরোধী দলনেতাকে ২ মিনিট বলার সুযোগও না দিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী বলার পরই স্পিকার অ্যাডজার্ন ঘোষণা করে দিলেন। আমরা ছাড়ব না। এ লড়াই হিন্দুদের অধিকার রক্ষার লড়াই।’

    যদিও এ দিন বিধানসভায় বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই শ্রেণিবিন্যাস অনগ্রসরতার ভিত্তিতেই করা হচ্ছে। অনেকে এ নিয়ে ভুল প্রচার করছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ধর্মের ভিত্তিতে এই শ্রেণিবিন্যাস বলে অনেকেই ভুল প্রচার করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে।

    প্রসঙ্গত, এই ওবিসি তালিকার জন্য একাধিক চাকরির পরীক্ষা আটকে রয়েছে। আটকে ভর্তি প্রক্রিয়া। সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন ওবিসি তালিকায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০১০–এর আগে রাজ্যের ওবিসি তালিকায় ৬৬টি জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, তার মধ্যে দু’টিকে আপাতত বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে খবর। তবে নতুন তালিকায় ৬৪টি গোষ্ঠীর বাইরে নতুন করে আরও ৭৬টি গোষ্ঠীকে সংযোজিত করা হয়। অর্থাৎ রাজ্যের নতুন ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত গোষ্ঠীর সংখ্যা ১৪০।

    যদিও ওবিসি তালিকা নিয়ে আদালতে ইতিমধ্যেই মামলা চলছে। ২০১০-এর পরে তৃণমূল জমানায় যে ওবিসি তালিকা তৈরি হয়েছিল, সেখানে আগের ৬৬টির সঙ্গে আরও ১১৩টি গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যে ভাবে এই ওবিসি তালিকা তৈরি হয়েছিল, তা বিধি মেনে হয়নি— এই যুক্তিতে তা গত বছর খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে তালিকা তৈরির করতে রাজ্য তিন মাস সময় চায়। তবে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন থাকাকালীনই নতুন তালিকায় সিলমোহর দেয় রাজ্য মন্ত্রিসভা।

  • Link to this news (এই সময়)