অর্ণব আইচ: পোস্তা এলাকায় অপরাধীদের উপদ্রবের অভিযোগ। বাড়ছে সিবিআই ও ইডি সেজে সোনা লুটের মতো ঘটনা। পোস্তা বাজার অঞ্চলে ব্যবসায়ী ও এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে এবার পুরো এলাকাজুড়ে ৫৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিল লালবাজার। কারণ, পোস্তা অঞ্চলেই রয়েছে সোনাপট্টি। তার জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য কলকাতার পোস্তা ও বড়বাজারের অংশ বাণিজ্যিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। সম্প্রতি লালবাজারের পক্ষ থেকে কলকাতা পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডটিকে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়। এই ওয়ার্ডে দুটি হাসপাতাল, হাঁসপুকুরিয়া ও আদিবাঁশতলায় সোনাপট্টি, হরিরাম গোয়েঙ্কা স্ট্রিট, কলাকার স্ট্রিট-সহ বেশ কয়েকটি অংশে প্রত্যেক দিনই কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়। কেনাকাটা এবং ব্যবসা করার জন্য দিনে কয়েক লক্ষ মানুষ ওই এলাকায় যান। ওই এলাকা থেকে প্রায়ই চুরি, পকেটমারির মতো অভিযোগ পুলিশের কাছে আসতে থাকে। তার উপর রয়েছে পুলিশ ও সিবিআই সেজে লুটপাট।
কিছুদিন আগেই সিবিআই অফিসার সেজে এক সোনার ব্যবসায়ীর কর্মচারীর কাছ থেকে ৪০০ গ্রাম সোনার গয়না লুট করা হয়। তার আগেও পুলিশ ও সিবিআই সেজে এই অঞ্চলে সোনা লুটের মতো ঘটনা ঘটেছে। আবার ঘটেছে ডাকাতির মতো অপরাধও। তারই পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে পোস্তা এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য বহুবার আবেদন করেছিল। কিছু জায়গায় ক্যামেরা বসানো হয়। কিন্তু সব জায়গায় ব্যবসায়ীরা ক্যামেরা বসাননি। ট্রাফিক পুলিশ ও পোস্তা থানার পক্ষ থেকে কিছু জায়গায় ক্যামেরা বসানো হয়। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় ক্যামেরা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তার উপর কয়েকটি অপরাধের তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে যে, পোস্তার কিছু জায়গা এখনও সিসিটিভির আওতার বাইরে। অথচ যে কোনও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও তদন্তে সিসিটিভির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই অপরাধীদের উপর নজরদারির জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পুরো এলাকায় সমীক্ষা করা হয়। যে জায়গাগুলিতে সিসিটিভির ক্যামেরা বসানো নেই, সেই জায়গাগুলিকে পুলিশ আধিকারিকরা চিহ্নিত করেন। ওই জায়গাগুলির নাম পোস্তা থানার পক্ষেও লালবাজারকে জানানো হয়।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, এই সমস্ত ক্যামেরার ফিড পোস্তা থানায় থাকবে। লালবাজার ও পোস্তা থানায় বসে আধিকারিকরা ওই এলাকার প্রত্যেকটি রাস্তার উপর সরাসরি নজর রাখতে পারবেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে পোস্তা থানা এলাকার কলাকার স্ট্রিট ও দেবেন্দ্র দত্ত লেন ক্রসিং, কলাকার স্ট্রিট ও শিবতলা স্ট্রিট, কলাকার স্ট্রিট ও রতন সরকার গার্ডেন স্ট্রিট ক্রসিং, শিবতলা স্ট্রিট ও বৈকুণ্ঠ শেঠ লেন ক্রসিং, রতন সরকার গার্ডেন স্ট্রিট এবং রাজা ব্রজেন্দ্র নারায়ণ স্ট্রিট ক্রসিংয়ে বসবে ক্যামেরা। এ ছাড়াও কে কে টেগোর স্ট্রিট এবং রাই লেন ক্রসিং, কে কে টেগোর এবং রবীন্দ্র সরণি ক্রসিংয়ের মতো রাস্তাও রয়েছে এই তালিকায়। আবার তালিকায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এবং ক্রসিংগুলির মধ্যে রয়েছে ব্রজেন্দ্র নারায়ণ স্ট্রিট, হাঁসপুকুর প্রথম লেন, হাঁসপুকুর প্রথম লেন এবং কানু লাল লেন ক্রসিং, সুখলাল জহুরি লেন, স্যর হরিরাম গোয়েঙ্কা স্ট্রিট রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।